চার বছর পর এলো ২৯ ফেব্রুয়ারি

চার বছর পর আবার ২০২৪ সালটি ৩৬৬ দিনের। প্রতি চার বছর পর ক্যালেন্ডার একটি বাড়তি দিন উপহার দেয়। সব সময় যেখানে ২৮ দিনে ফেব্রুয়ারি মাস হয়, সেখানে ৩৬৫ দিনে হয় বছর। কিন্তু চার বছর পর পর ফেব্রুয়ারি মাসটি হয়ে যায় ২৯ দিনে। এই ঘটনাকে অধিবর্ষ বা লিপ ইয়ার বলা হয়। ২০২৪ এমন একটি লিপ ইয়ার অর্থাৎ অতিরিক্ত একদিনের বছর।

সহজভাবে বলতে গেলে, প্রতি চার বছরে একটি অধিবর্ষ বা লিপ ইয়ার পাওয়া যায়। ২০২০ একটি অধিবর্ষ ছিলো এবং ২০২৪-এর পরে, ২০২৮ একটি অধিবর্ষ হিসাবে বিবেচিত হবে। এ বছর ফেব্রুয়ারির ক্যালেন্ডারে একটি অতিরিক্ত দিন যোগ হয়েছে। অর্থাৎ বছরটি ৩৬৫ দিনের পরিবর্তে ৩৬৬ দিনের।

বাংলা, হিজরি ক্যালেন্ডার আমাদের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও সারা বছর সব দাফতরিক ও সাধারণ জীবনযাপনে ইংরেজি বর্ষের ক্যালেন্ডারই বহুল ব্যবহৃত। আসলে এই ইংরেজি ক্যালেন্ডার গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার নামে পরিচিত, যেখানে ৩৬৫ দিনে এক বছর হিসাব করা হয়।

বৈজ্ঞানিক হিসাব মতে, সূর্যের চারপাশে পৃথিবীর কক্ষপথে প্রায় ৩৬৫ দশমিক ২৫ দিন সময় লাগে। আরো সহজভাবে বলতে গেলে, একটি সৌর ক্যালেন্ডারের এক বছরে পৃথিবী সূর্যের চারপাশের বৃত্তাকার কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করে। পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরতে সময় নেয় ৩৬৫ দিন, ৫ ঘণ্টা, ৪৮ মিনিট এবং ৪৬ সেকেন্ড।

একটি সাধারণ বছর এভাবেই ৩৬৫ দিনে শেষ হয়। অতিরিক্ত প্রায় ছয় ঘণ্টা চার বছরে ২৪ ঘণ্টা হয়। এই ২৪ ঘণ্টা হলো পৃথিবীর একবার নিজের অক্ষের চারিদিকে ঘোরার সময়। সেই হিসাবে অতিরিক্ত সময় বা ২৪ ঘণ্টা চতুর্থ বছরে ফেব্রুয়ারি মাসে অতিরিক্ত দিন হিসেবে যুক্ত হয়। এটি করা না হলে ফসলের চক্র এবং ঋতু পরিবর্তনের সময় ধীরে ধীরে বদলে যাবে।

জানা যায়, রোমান ক্যালেন্ডারে ৩৫৫ দিন ছিলো (যা সৌর বছরের চেয়ে ছোট ছিল)। সময় ও ঋতুগুলোর সঙ্গে এই ক্যালেন্ডারের অসামঞ্জস্য ছিলো। তাই, রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার জুলিয়ান ক্যালেন্ডার প্রবর্তন করেছিলেন, যা একটি সৌর ক্যালেন্ডার এবং মিশরীয় ক্যালেন্ডার দ্বারা অনুপ্রাণিত। এতে একটি লিপ ইয়ার রাখা হয়েছিলো। পরবর্তী সময়ে, ১৫৮২ সালে, যখন জুলিয়ান ক্যালেন্ডারকে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে পরিমার্জিত করা হয়, তখন ফেব্রুয়ারিতে একটি লিপ ডে যোগ করার ঐতিহ্য বজায় ছিলো।

লোকমুখে প্রচলন আছে, জুলিয়াস সিজার রোমের ক্ষমতায় আসার আগে পর্যন্ত ৩৫৫ দিনে বছর, এমন ক্যালেন্ডারই সবাই মেনে চলতো যেখানে প্রতি দুই বছর পরপর একটা অতিরিক্ত ২২ দিনের মাস যু্ক্ত হতো। কিন্তু এটা আসলে সমস্যার একটা জটিল সমাধান ছিলো এবং উৎসবের দিনগুলো ভিন্ন ভিন্ন ঋতুতে যেতে শুরু করে। তাই সিজার তার জ্যোতির্বিজ্ঞানী সোসিজেনেসকে বিষয়টি সহজ করার নির্দেশ দেন।

সোসিজেনেস তখন ৩৬৫ দিনে বছর করে যে অতিরিক্ত ছয় ঘণ্টার মতো থেকে যায়, সেটি মিলিয়ে নিতে চার বছর পরপর একটা অতিরিক্ত দিন ক্যালেন্ডারে যুক্ত করেন। আর এভাবেই ২৯ ফেব্রুয়ারির জন্ম। যা পরবর্তীতে পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরি সূক্ষ্ম পরিমার্জন করেন।

স্বাআলো/এস

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য প্রস্তাবিত
Related

হঠাৎ উধাও ফেসবুকের টাইমলাইন

ফেসবুকে নিজের বা কোনো বন্ধুর প্রোফাইলে ঢুকলেই দেখা যাচ্ছে...

ডাউন ফেসবুক-মেসেঞ্জার-ইনস্টাগ্রাম

আন্তরর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্বের সবচেয়ে বড় জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক...

বাজারে এলো হোন্ডার নতুন ফায়ারব্লেড

বছরজুড়ে একের পর এক নতুন মডেলের মোটরসাইকেল বাজারে ছাড়ছে...

শনিবার ব্যাহত হবে ইন্টারনেট সেবা

ঢাকা অফিস: কক্সবাজারে স্থাপিত দেশের প্রথম সাবমেরিন ক্যাবল (সি-এমই-ডব্লিউই-৪)...