সম্পাদকীয়: কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ছেলের মৃত্যুর সংবাদ শুনে তার বাবারও মৃত্যু হয়েছে। ছেলে আবিদুল মণ্ডল (৪৫) মারা যাওয়ার মাত্র দুই ঘণ্টার ব্যবধানে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে কাবিল মণ্ডলের (৭০) মৃত্যু হয় বলে জানা গেছে।
১৩ ফেব্রুয়ারি উপজেলার ছেঁউড়িয়ায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রথমে ছেলে স্ট্রোক করে মারা যান। পরে তার মৃত্যুর খবর শুনে বাবাও স্ট্রোক করে মারা যায়।
আজকাল সন্তানরা মা-বাবার প্রতি যে আচরণ করে তা বন্য পশুর মধ্যে আর ওই সব নিষ্ঠুর সন্তানের মধ্যে পার্থক্য করা যায় কি? কিন্তু সন্তানের প্রতি মা-বাবার স্নেহ মমতার কোনো ঘাটতি নেই। সন্তান মা-বাবার প্রতি পশু সুলভ আচরণ করে মানসিকভাবে দগ্ধ করছে, তাদের হৃদয় পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে তারপরও সন্তানকে দূরে ঠেলে দিতে পারছে না। সন্তানের প্রতি মা-বাবার কি মমত্ববোধ তা কুষ্টিয়ার কাবিল মণ্ডলের মৃত্যু থেকে জানা যায়। মানুষ আশরাফুল মখলুকাত অর্থাৎ সৃষ্টি সেরা জীব। যারা মানুষের সমাজে বাস করেও মা-বাবার সাথে পশুর মতো আচরণ করে তাদের এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে হবে। বাবা-মায়ের দোয়া ছাড়া ইহকাল-পরকাল কোনো কালেই সন্তানের কল্যাণের আশা নেই। মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেস্ত। ধর্মের এই মর্মবাণী কি তাদের কানে কোনো দিন পৌছায়নি? বাবা-মাকে আশ্রয়ের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ করতে হলো। কিন্তু বাবা-মার প্রতি যদি সন্তানের সম্মান শ্রদ্ধা না থাকে তাহলে ধরে বেধে কি তা আর পাওয়া যায়?
কুষ্টিয়ায় ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে প্রাণ গেলো বাবারও
দিন দিন পারিবারিক বন্ধন যেভাবে শিথিল হচ্ছে তাতে একদিন দেখা যাবে প্রবীণদের দেখার বা সেবা-যত্নের কেউ নেই। এ ক্ষেত্রে সরকারি উদ্যোগে প্রবীণদের নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা উচিত বলে আমরা মনে। আমরা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, এমন মানসিকতার সন্তানদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। সভ্য সমাজে মাতা-পিতার প্রতি এ ধরনের আচরণ চলতে দেয়া যায় না।
স্বাআলো/এস