spot_img

খুলনায় বাঁধ ভেঙে ২০টি গ্রাম প্লাবিত

খুলনা ব্যুরো: ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে খুলনার উপকূল কয়রায় বেড়িবাঁধ ভেঙে অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। একইসঙ্গে খুলনার দাকোপ উপজেলায় বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকছে।

উপজেলার শিবসা ও ঢাকী নদীর বাঁধ ভেঙে তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের কামিনীবাসিয়া গ্রামের ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা তলিয়ে গেছে।

রবিবার (২৬ মে) দিবাগত রাতের এ ঘটনায় ভেসে গেছে চিংড়ির ঘের, ভেঙে গেছে কাঁচা ঘরবাড়ি ও দোকানপাট।

ভারী বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলের ক্ষেত, উপড়ে গেছে বহু গাছ। অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে খুলনা মহানগরীর নিম্নাঞ্চল। ঝড়ে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য গাছ উপড়ে পড়েছে। সড়কের দুই পাশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড ও বিলবোর্ড ভেঙে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

ঘূর্ণিঝড় রেমালে ১৯ উপজেলার ভোট স্থগিত

জানা গেছে, রবিবার দিবাগত রাতে জোয়ারের চাপে মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের সিংহেরকোণা, মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া ও দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের বেলাল গাজীর বাড়ির সামনের বাঁধ ভেঙে গেছে। এ ছাড়া বাঁধের নিচু কয়েকটি জায়গা ছাপিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এসব জায়গায় এলাকার মানুষ রাতভর মেরামত কাজ চালিয়েও শেষ রক্ষা করতে পারেনি। এতে ভেসে গেছে শতাধিক চিংড়ির ঘের, ভেঙে গেছে কয়েকশ কাঁচা ঘরবাড়ি ও দোকানপাট।

কয়রা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবিএম তারিক উজ জামান বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ও তুলনামূলক নিচু স্থানে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন কাজ করছেন। আমি নিজেও সেখানে যাচ্ছি। জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এখন ঝড়ো বাতাস বইছে।

দাকোপ উপজেলার শিবসা ও ঢাকী নদীর বাঁধ ভেঙে তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের কামিনীবাসিয়া গ্রামের ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা তলিয়ে গেছে। উপজেলার সুতারখালী ইউনিয়নের কালাবগী ফকিরকোনা, ঝুলন্তপাড়া এবং পন্ডিতচন্দ্র স্কুল সংলগ্ন এলাকা সম্পূর্ণ প্লাবিত। এ অবস্থায় চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়দেব চক্রবর্তী বলেন, জোয়ারের পানিতে দাকোপের বেশকিছু এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। আমার ইউএনও বাংলোর সামনের পুকুর তলিয়ে গেছে। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রবিবার রাত থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টিতে নগরীর লবণচরা, টুটপাড়া, মহিরবাড়ি খাল পাড়, শিপইয়ার্ড সড়ক, রূপসা, চানমারী বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এখনো ওই সব সড়কে পানি রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

খুলনা আবহাওয়া অধিদফতরের ইনচার্জ আমিরুল আজাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। বর্তমানে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। উপকূলীয় এলাকা কয়রা, পাইকগাছা, দাকোপ, বটিয়াঘাটায় জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়। শুনেছি বাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

স্বাআলো/এস

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য
Related

যশোরে তালাকপ্রাপ্ত স্বামী-স্ত্রীর পাল্টাপাল্টি মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরে বাড়ি দখল, মারামারি, টাকা ও স্বর্ণালংকার...

খুলনায় অধিকাংশ স্লুইস গেট নষ্ট, পানিবন্দি বাসিন্দারা

খুলনা ব্যুরো: খুলনা মহানগরীর ৩০ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের...

যশোরে বাঁধ ভেঙে তিন গ্রাম প্লাবিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরের অভয়নগর উপজেলার আতাই নদের বাঁধ ভেঙে...

মাগুরায় নাশকতা মামলায় বিএনপির ১১ নেতা-কর্মী আটক

লিটন ঘোষ জয়, মাগুরা: কোটা আন্দোলনে সহিংসতা এবং নাশকতার...