
খুলনা ব্যুরো : জীবাণুযুক্ত ও মানহীন জার ও বোতলজাত পানির নির্বিঘ্নে ব্যবসা চলছে খুলনা মহানগরীতে। নামে বেনামে প্রায় অর্ধশত প্রতিষ্ঠান বছরের পর বছর এ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। অনেক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একাধিকবার অভিযান চালিয়েও বন্ধ করা যাচ্ছে না মানহীন দূষিত পানির বাজারজাত প্রক্রিয়া।
খুলনার প্রায় সব এলাকাতেই রয়েছে অনুমোদনহীন এসব প্রতিষ্ঠান। যারা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জারে পানি ভরছে, পানি ভরার আগে জারগুলো ঠিকভাবে জীবাণুমুক্তও করছে না ।
জারে ভেজাল ও মানহীন পানি দিয়ে ক্রেতাদের প্রতারিত করে চলেছে একশ্রেণির কারখানা মালিক। অনেকের বিএসটিআইয়ের লাইসেন্স থাকলেও তারা কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ওয়াসার লাইন থেকে পানি সংগ্রহ করে কোনো পরিশোধন ছাড়াই বাজারে এ পানি সরবরাহ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সুপেয় পানি প্রাপ্তির আশায় প্রতিনিয়তই প্রতারিত হচ্ছে নগরীর মানুষ। ড্রিংকিং ওয়াটারের প্রতিষ্ঠানগুলো বিএসটিআই’র (বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন) পরীক্ষায় পাস না করেও বিভিন্ন জায়গায় পানি বিক্রি করছে। চকচকে বিজ্ঞাপন। নেই কেমিস্ট বা মাইক্রোবায়োলজিস্ট। ব্যবহার করছেন বিএসটিআই’র লোগো। যা প্রতারণা বলে মনে করছেন নগরবাসী।
আরো পড়ুন>>> খুলনায় নারী ব্যাংক কর্মকর্তাকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ৫ জনের ফাঁসি
কিছু প্রতিষ্ঠানে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বিএসটিআই এবং জেলাপ্রশাসকের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অভিযানে জরিমানা করা হয় এবং সবকিছু ঠিক করতে সময় দেওয়া হয়। কিন্তু জরিমানা দিয়েই ব্যবসা করে যাচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান।
বিএসটিআই সূত্রে জানা গেছে, খুলনা বিভাগে মাত্র ১৮টি ড্রিংকিং ওয়াটার কোম্পানিকে অনুমোদন দিয়েছে বিএসটিআই। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে মহানগরীতে খুলনা ড্রিংকিং ওয়াটার, ডিভাইন, অক্সি, অলিক্স, সবুজ কিউ, ক্রিস্টাল, সেফ, লিংকার্স, রেইন ওয়াটার, সাতক্ষীরার দৃষ্টি, বারযাখ, রিমঝিম, হোমস, বাগেরহাটের সাফা, পাইকগাছার কিউসি, নওয়াপাড়ার উইনার, কুষ্টিয়ার মিলেনিয়াম এবং লাবিদ। এর মধ্যে মহানগরীতে মাত্র ৯টি প্রতিষ্ঠানকে বিএসটিআই অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু নগরীতে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা রয়েছে প্রায় অর্ধশত। নগরীর বিভিন্ন অলিগলি বা লোক চোক্ষুর আড়ালে চলছে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান। তবে দিনে বা রাতে রাস্তায় দেখা যায় তাদের পরিবহণ এবং প্রতিনিধিদের ব্যস্ততা।
দু’মাস আগে জরিমানা দেয়া মহানগরীর আমতলার মোড়ের রি-ফ্রেশ ড্রিংকিং ওয়াটারের স্বত্বাধিকারী এবং ব্যবস্থাপক সুব্রত মন্ডল জানান, খুলনা শহরে ২৫টির ওপরে কারখানা রয়েছে। কয়টা অনুমোদন নিয়েছে? তিন-চারটার অনুমোদন রয়েছে। বাকীগুলো অবৈধ। তারা যেভাবে চলছে, আমরা সেইভাবে চলছি।
বিএসটিআই পরিচালক আব্দুল মান্নান জানান, ড্রিংকিং ওয়াটারের জন্য অবশ্যই বিএসটিআই থেকে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন করতে হবে। কোনো প্রতিষ্ঠান যদি তা না করে তাহলে সেটি হবে অবৈধ। কেউ যদি এইসব প্রতিষ্ঠানের খোঁজ আমাদেরকে দেয় তাহলে আমাদের ব্যবস্থা নিতে সহজ হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শিকদার শাহীনুর আলম জানান, প্রথমবার জরিমানা করা হয় এবং সময় দেয়া হয় সবকিছু ঠিক করতে। না করলে জরিমানা দ্বিগুণ হবে।
স্বাআলো/এসএ
.
Admin
