কাদা পানিতে বন্দী ২০ হাজার মানুষ

রংপুর ব্যুরো : কাদা পানিতে বন্দি হয়ে পড়েছে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় ইকরচালী ও হাড়িয়ারকুটি  ইউনিয়নের ১৫ গ্রামের মানুষ। এতে করে তাদের জীবন যাত্রায় বিভিন্ন বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় রাস্তাটিতে সামান্য বৃষ্টি হলেই শুরু হয় কাদার প্রভাব। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় ১৫ গ্রামের ২০ হাজার মানুষকে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের তারাগঞ্জ উপজেলার ইকরচালি ইউনিয়নের বরাতী ব্রিজ থেকে হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের কাশিয়াবাড়ী বাজার পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরত্ব এ রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করে প্রায় ১৫ গ্রামের ২০ হাজার মানুষ। এই বিপুল সংখ্যক মানুষের উপজেলা সদরে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা এটি। কিন্তু দীর্ঘদিন  সংস্কার না হওয়ায় রাস্তাটিতে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়। ফলে সৃষ্টি হয় কাদার। রাস্তাটির মহাসড়ক থেকে বরাতী বাজার পর্যন্ত ১ কিলোমিটার পাকা হলেও বরাতী বাজার থেকে কাশিয়াবাড়ি বাজার পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরত্ব এ রাস্তাটি কাচা থাকায় বর্ষা মৌসুমে গ্রামগুলোর লোকজন এরকম কাদাবন্দি হয়ে পড়ে। ফলে তাদের জরুরী কাজে উপজেলা সদরে যেতে হলে হাড়িয়ারকুঠি ডাঙ্গীরহাট হয়ে বামনদীঘী দিয়ে ঘুরে আসতে হয়। এতে করে তাদের প্রায় ১৫ কি.মি. রাস্তা বেশি ঘুরতে হয়। ফলে দ্বিগুণ খরচের পাশাপাশি তাদের সময়ও নষ্ট হয় অনেক বেশি।

ইকরচালি ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য রবিউল ইসলাম রবি বলেন, আমার ওয়ার্ডের অধিকাংশ জনগণ এই রাস্তা দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদসহ উপজেলা সদরে যাতায়ত করে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর মহাসড়ক থেকে বরাতী বাজার পর্যন্ত মাত্র ১ কি.মি. পাকা হলেও পুরো রাস্তাটিই কাচা পড়ে আছে। ফলে জনগণ কাদাপানি পার হয়ে জরুরি কাজে বের হচ্ছে না। রাস্তাটি পাকা হওয়া অত্যন্ত জরুরি

বরাতী কামারপাড়া গ্রামের আকাশ রায় ও  নিতাই রায় জানান, এই রাস্তা দিয়ে প্রত্যেকদিন সকাল থেকে মধ্যে রাত পর্যন্ত অত্যন্ত ৬ থেকে ৭ হাজার মানুষ যাতায়ত করেন। বরাতী কামারপাড়া, পালপাড়া, নারায়নজন, মুকুলের বাজার, জেলেপাড়া, ইকরচালিপাড়াসহ এইদিকের লোকজনের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি এটি। বিকল্প দুটি রাস্তা থাকলেও একটি দিয়ে নদী পার হতে হয়। কিন্তু সেখানে কোন ব্রিজ নাই। আর অপর রাস্তাটি দিয়ে নদী না থাকলেও অন্তত ১৪ থেকে ১৫ কি.মি. বেশি ঘুরে যেতে হয়। তাই আমরা এই দিকে লোকজন খুব কষ্টে আছি।

আরো পড়ুন>>>গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

বরাতী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী আশা মনি বলে, রাস্তার কাদার জন্য স্যান্ডেল হাতে নিয়ে স্কুলে আসতে হয়।

বরাতী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান বলেন, কাদোর রাস্তাত পাও পিছলী পড়লে বই খাতা হামার নষ্ট হয়ে যায়।

কাশিয়াবাড়ী গ্রামের ভ্যানচালক রেজাউল করিম বলেন, কাচা রাস্তা কোনা ভ্যানধরি পাড় হইতে মোর ভ্যানেরও দম বন্ধ হয়া যায়, মোরো দম বন্ধ হয়ে যায়।

হাড়িয়াকুঠি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদ বাবুল বলেন, তারাগঞ্জ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে আমার ইউনিয়টির আয়তন ও জনসংখ্যার দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি। আমার ৩ থেকে ৪টি ওয়ার্ডের প্রায় ১০ হাজার মানুষ তাদের বিভিন্ন প্রয়োজেনে তারাগঞ্জ উপজেলা সদরসহ তারাগঞ্জ হাট-বাজারে ওই রাস্তাটি দিয়ে যায়।

তারাগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আহমেদ হায়দার জামান জানান, রাস্তাটির ১ কি.মি.পাকা হয়েছে। বাকী রাস্তাটিও পাকাকরণের তালিকায় আছে।

স্বাআলো/এম

.

Author