
জেলা প্রতিনিধি, ফেনী : চলতি বছর এসএইচসি পরীক্ষায় অংশ নেয়া দুইটি পত্রে এ গ্রেট পেয়েছে ফেনীর সোনাগাজীর কিশোরী নুসরাত জাহান রাফি। বুধবার সারাদেশে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের দিন নুসরাতের দুটি বিষয়ের ফলাফলও জানা যায়। ফেনীর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় আলিমের দুটি পরীক্ষা দেয়ার পর তাকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।
কুরআন ও হাদিস পরীক্ষায় ‘এ’ গ্রেড পাওয়া নুসরাতের সার্বিক ফলাফল অবশ্য ‘অকৃতকার্য। কারণ, আর কোনো পরীক্ষা সে অংশ নিতে পারেনি।
নুসরাতের প্রতিষ্ঠান থেকে ১৭৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। নুসরাতসহ পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছেন ২৭ জন।
মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ হুসাইন বলেন, নুসরাত কোরআন মাজিদ, হাদিস ও উসুলে হাদিস পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। সে এতে ‘এ’ গ্রেড পেয়েছে।
ফলাফল জানতে আসা নুসরাতের সহপাঠী তামান্না বলেন, আজ নুসরাতেরও পরীক্ষার রেজাল্ট নিয়ে আনন্দে থাকার কথা ছিল। কিন্তু সে আমাদের মাঝে নেই। দুটি পরীক্ষায় সে ‘এ’ গ্রেড পেয়েছে। বাকি পরীক্ষা দিতে পারলে নুসরাত ভালো ফলাফল করত বলে আমার বিশ্বাস। কারণ লেখাপড়ার প্রতি তার ভীষণ আগ্রহ ছিল।
আরো পড়ুন>>>মিন্নি পাঁচ দিনের রিমান্ডে
আলিম পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর থেকে বিলাপ করছিলেন নুসরাতের মা শিরিনা আক্তার। তিনি বলেন, আমার মেয়ে দুনিয়ার পরীক্ষায় পাস করতে না পারলেও আখেরাতের পরীক্ষায় পাস করবে।
নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, সকালে নুসরাতের বেশ কয়েকজন সহপাঠী ফোন দিয়ে রেজাল্টের খবর জানায়। ওরা নুসরাতের কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়ে। নুসরাত পরীক্ষা দিতে পারলে সেও ভালো রেজাল্ট করত।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা নুসরাতকে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে যৌন নিপীড়ন করেন বলে অভিযোগ আছে। এ ঘটনায় একইদিন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করলে তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
এ ঘটনার পর থেকে সিরাজ উদ দৌলার সহযোগীরা নানাভাবে নুসরাতের পরিবারকে মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। কিন্তু মামলা তোলেনি পরিবার। ৬ এপ্রিল নুসরাতকে মাদ্রাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়া হয়। ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত।
স্বাআলো/ডিএম
.
Admin
