
রংপুর ব্যুরো : বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা চলমান বন্যার পানি বৃদ্ধির কারণে রংপুর জেলায় কয়েক শ’ মৎস্য চাষি ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন। জেলার ৩ উপজেলায় ছোট বড় মিলে মাছ এবং পোনা উৎপাদনকারি ৫৮২ টি পুকুর ভেসে গেছে। এতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ২ কোটি ৮ লাখ টাকার বেশি। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে গংগাচড়া উপজেলার মৎস্য চাষিরা। তার পরেই রয়েছে কাউনিয়া উপজেলার চাষিরা। এতে করে মৎস্যচাষিদের মধ্যে হতাশায় দেখা দিয়েছে।
গঙ্গাচড়া উপজেলার খামার মোহনা গ্রামের মৎস্য চাষি সামিউল ইসলাম জানান, ৫০ শতকের পুকুরের মাছ রবিবার রাতে ভেসে গেছে। ভেসে যাওয়া মাছের মধ্যে পাবদা, রুই, কাতলা ও গুলসা জাতীয় মাছ এবং পোনা । এখন সাড়ে ৩ একর পুকুরে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। তাই মাছ যাতে ভেসে যেতে না পারে এজন্য পুকুরের চারিদিকে নেট দিয়ে ঘিরে দিয়েছেন । তিনি জানান, পানি বৃদ্ধি পেলে তার ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হবে। তিনি অভিযোগ করেন ২ বছর আগে একবার ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মৎস্য অফিস থেকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ লিখে নিয়ে গেলেও কোন রকম সহয়োগিতা পাননি।
কাউনিয়া উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষিরা জানান, পুকুরের চারিদিকে নেট এবং বাঁশের বানা দিয়েও মাছ রক্ষা করতে পারেননি। পানির স্রোতে পুকুরের চাষকৃত মাছ ভেসে গেছে।
রংপুর জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় ভেসে যাওয়া মোট পুকুরের সংখ্যা হচ্ছে ৫৮২ টি। ভেসে যাওয়া মাছের আনুমানিক পরিমাণ হচ্ছে ৮৭ দশমিক ৬৯ মেট্রিক টন। যার মূল্য হচ্ছে প্রায় ১ কোটি ৮৫ লাখ ১০ হাজার টাকা। ২৩ লাখ ১১ হাজার টাকার সমপরিমাণ অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে।
গংগাচড়া উপজেলায় বন্যায় ভেসে যাওয়া পুকুরের সংখ্যা হচ্ছে ৪৯৫টি। ভেসে যাওয়া মাছের পরিমাণ হচ্ছে ৭৫ দশমিক ৮০ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ৩৬ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। ভেসে গেছে ৪ লাখেরও বেশি পোনা। অবকাঠামেরা ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২০ লাখ ৫৫ হাজার টাকার।
কাউনিয়া উপজেলায় বন্যায় ভেসে যাওয়া পুকুরের সংখ্যা হচ্ছে ৫০টি। ভেসে যাওয়া মাছের পরিমাণ হচ্ছে ৪ দশমিক ২৭ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক মূল্য ৭ লাখ ১৫ হাজার টাকা। ভেসে গেছে ৫৮ হাজারেরও বেশি পোনা। অবকাঠামেরা ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার টাকার।
আরো পড়ুন>> কাদা পানিতে বন্দী ২০ হাজার মানুষ
পীরগাছা উপজেলায় বন্যায় ভেসে যাওয়া পুকুরের সংখ্যা হচ্ছে ৩৭টি। ভেসে যাওয়া মাছের পরিমাণ হচ্ছে ৬ দশমিক ৬৬ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক মূল্য ৭ লাখ ৬২ হাজার টাকা। অবকাঠামেরা ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩১ হাজার টাকা।
জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক কাজী আতিয়াহ্ তাইয়েবী জানান, চলমান বন্যায় জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষিদের তালিকা করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ঝুঁকিতে থাকা মৎস্য চাষিদের চাষকৃত মাছ যাতে ভেসে যেতে না পারে এ জন্য পুকুরের চারিদিকে জাল দিয়ে ঘিরে দেয়ার জন্য মৎস্য বিভাগ থেকে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
স্বাআলো/এম
.
Admin
