প্রিয়া সাহার জন্মভূমি পিরোজপুর ও শ্বশুর বাড়ি যশোরে আলোচনার ঝড়

জেলা প্রতিনিধি, পিরোজপুর: ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করে নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থের ঘটনায় ক্ষুদ্ধ গোটা বাংলাদেশ ।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে প্রিয়া সাহা ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সুবিধা অর্জনের চেষ্টা করেছেন। এমন বক্তব্য মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যে প্রণোদিত বলে মনে করেছেন অনেকেই।

প্রিয়া সাহা ওরফে প্রিয়া বালা বিশ্বাস। তার বাবার বাড়ি পিরোপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার পশ্চিম বানিয়ারী গ্রামে। শ্বশুর বাড়ি যশোরে। স্বামী মলয় কুমার সাহা, দুদক সদর দফতরে উপ-পরিচালক পদে কর্মরত। দুই মেয়ে প্রজ্ঞা পারমিতা সাহা ও ঐশ্বর্য লক্ষী সাহা যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যায়নরত।  প্রিয়া সাহা ওরফে প্রিয়া বালা বিশ্বাস ‘শারি’ নামে একটি এনজিওর পরিচালক। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদকের দ্বায়িত্ব পালন করছেন।

হিন্দু-বৌদ্ধ-খিষ্ট্রান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট রানা দাস গুপ্ত অসুস্থ থাকায় গত ১৬ জুলাই  রাতে প্রিয়া সাহা সংগঠনের প্রতিনিধি হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন এবং ১৭ জুলাই  ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেন।

এ সময় প্রিয়া সাহা ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেছেন, বাংলাদেশে ৩৭ মিলিয়ন হিন্দু-বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষ নিখোঁজ হয়েছে। আমি আমার বাড়ি হারিয়েছি। তারা আমার বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে, আমার জমি কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু কোনো বিচার হয়নি। মুসলিম মৌলবাদী গ্রুপ এগুলো করছে। তারা সব সময় রাজনৈতিক ভাবে শেল্টার পায়।

প্রিয়া সাহার এমন অভিযোগের পর থেকেই বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, তার জন্মস্থানসহ সর্বত্রই সমালোচনার ঝড় বইছে। এ ঘটনাকে ষড়যন্ত্র, কেউ কেউ এর পেছনে রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন।

সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে স্বাক্ষাতকালে প্রিয়া সাহার বাংলাদেশ বিরোধী বক্তব্যের বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পিরোজপুরের এনজিও কর্মীরা বলেন, তার মেয়েরা আমেরিকায় লেখাপড়া করছে। হয়তো নিজের মেয়েদেরকে নাগরিকত্ব (গ্রিনকার্ড) পাইয়ে দেয়ার জন্য প্রিয়া সাহা ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে এ সব অভিযোগ করে অনুকম্পা নেয়ার চেষ্টা করছেন।

এ বিষয়ে নাজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান অমূল্য রঞ্জন হালদারের সাথে আলাপকালে স্বাধীন আলো’র এ প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের নাজিরপুরের হিন্দু-মুসলিম সহাবস্থানে রয়েছি। এখানে সংখ্যালঘু বা  সাম্প্রদায়িক কোন দাঙ্গা নেই।

প্রিয়া সাহার বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশে ৩৭ মিলিয়ন হিন্দু-বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষ নিখোঁজ রয়েছে এ তথ্য জরিপ আমাদের কাছে নেই।  আমাদের উপজেলায় এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। এখন কেউ যদি স্বেচ্ছায় ভারত বা অন্যত্র চলে যায় এটা তাদের ব্যাক্তিগত বিষয়। কোন চাপে বা কাউকে চলে যেতে বাধ্য করেছে এমন সংবাদ ভিত্তিহীন।

তিনি আরো বলেন, আমি হিন্দু হলেও এখানকার মুসলমানদের ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে। তার দেয়া বক্তব্য ব্যক্তিগত। আমরা তার দেয়া বক্তব্যকে সমর্থন করিনে।

স্বাআলো/আরবিএ

.

Author