
খুলনা ব্যুরো : দেশে সীমিত গণতন্ত্র, সীমিত কথা বলার অধিকার ও সীমিত প্রচারণার যুগ চলছে। আমরা প্রচারণার জন্য মাইক ব্যবহারের অনুমতি চাইলেও প্রশাসন আমাদেরকে সে অনুমতি দেয়নি।
মঙ্গলবার দুপুরে মহানগরীর কে ডি ঘোষ রোডে বিএনপি কার্যালয়ে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে ২৫ জুলাই বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সমাবেশ জনসমুদ্রে রূপ নেবে। গোটা দেশ ও জাতি মহাসংকটে রয়েছে। মানুষ মনে করে, আশু এ অবস্থার পরিবর্তন দরকার। একমাত্র জনগনের আন্দোলনের বিজয়ের মধ্য দিয়েই এই দুঃসহ পরিস্থিতির পরিবর্তন সম্ভব।
সমাবেশ আয়োজনে খুলনা সিটি করপোরেশনের লিখিত অনুমতি এবং মেট্রোপলিটন পুলিশের মৌখিক অনুমিত মিলেছে জানিয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা মঞ্জু বলেন, বিএনপি একটি নিবন্ধিত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংগঠন। একটি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই পালন করতে চাই এবং সে জন্য তিনি পুলিশসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি জানান, সারা দেশের বিভাগীয় সদরগুলোতে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর ইতোমধ্যে বরিশাল ও চট্টগ্রামে জনতার ঢল নেমেছিল। শান্তিপূর্ণ এসব কর্মসূচিতে উপস্থিতি দেখে জনগনের মনে আশার সঞ্চার হয়েছে। ইনশাল্লাহ খুলনার তৃতীয় সমাবেশও জনতার সমুদ্রে পরিণত হবে।
নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, এ কর্মসূচিকে ঘিরে দলের সকল পর্যাযের নেতাকর্মীদের মাঝে নতুন উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। উজ্জীবিত কর্মীরা কর্মসূচি সফল করতে রাতদিন প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। খুলনা মহানগর, জেলা এবং বিভাগের ৯ জেলায় দফায় দফায় প্রস্ততি সভা, ঘরোয়া বৈঠক, গণসংযোগের মাধ্যমে জনগনকে দাওয়াত দেওয়া হচ্ছে। লক্ষাধিক লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে ওয়ার্ড, থানা, ইউনিয়ন, পৌরসভা ও উপজেলা পর্যায়ে। পোস্টার টানানো হয়েছে দেয়ালে দেয়ালে। কর্মসূচি সফল করতে গঠিত ১২ টি উপ কমিটি তাদের করণীয় নির্ধারণ করে কাজ করে চলেছেন।
নজরুল ইসলাম মঞ্জু অভিযোগ করে বলেন, সীমাহীন দূর্নীতি ও অপশাসনের ডুবে যাচ্ছে দেশ। মধ্যরাতের ভোট ডাকাতির সরকার দায়িত্ব পালনে নির্বিকার নিশ্চল। হাইকোর্টের আদেশে দেশ পরিচালনা হচ্ছে। হাইকোর্ট নির্দেশ দিচ্ছে মশা মারো, হাইকার্টে বলছে খাদ্যে ভেজাল বন্ধ করো, হাইকোর্ট বলছে সড়ক মেরামত করো, হাইকোর্ট হুকুম দিচ্ছে পিটিয়ে মানুষ হত্যা বন্ধ করো। বিচারহীনতার সংস্কৃতি কারণে সামাজিক অস্থিরতা ও অবক্ষয় সৃষ্টি হয়েছে।
মঞ্জু জানান, বিভাগীয় সমাবেশ কর্মসূচিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় স্থায়ী কমিটির ৫ জন সদস্য, নির্বাহী কমিটির শীর্ষ নেতা এবং অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য রাখবেন।
আরো পড়ুন>>> রংপুর উপনির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বিএনপি
তিনি জানান, বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। কৃষক তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায়্যমূল্য পায়নি। নারী ও শিশু নির্যাতন ভয়াবহ মাত্রায় পৌছেছে। শেয়ার বাজার, ব্যাংক বীমা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে লুটপাট, বিদেশে অর্থ পাচার অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই। সংবাদপত্র ও সাংবাদিকরা দমন পীড়নের শিকার। পাটকল শ্রমিকরা বকেয়া মজুরী ভাতার দাবিতে বারবার রাজপথে নামতে বাধ্য হচ্ছেন। তাদের মজুরী কমিশন বাস্তবায়ন হয়নি। বিভাগীয় সমাবেশ থেকে নেতারা এসব বিষয়ে কথা বলবেন।
সাংবাকিদের এক প্রশ্নের জবাবে মঞ্জু বলেন, ২০ দলীয় জোট ভাঙ্গেনি। বরং জোট আরো শক্তিশালী হবে এবং সম্প্রসারিত হবে। বিএনপির কর্মসূচির মাধ্যমে দলকে আরো শক্তিশালী ও সংগঠিত করে জোটের বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
মিট দ্য প্রেস আরো বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা।
এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ প্রচার সম্পাদক কৃষিবীদ শামীমুর রহমান শামীম, নগর নেতা মনিরুজ্জামান মনি, সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, আমীর এজাজ খান, অধ্যাপক ডাঃ গাজী আব্দুল হক, জাফরউল্লাহ খান সাচ্চু,শাহজালাল বাবলু, এ্যাডভোকেট বজলুর রহমান, শেখ ইকবাল হোসেন, মনিরুজ্জামান মন্টু, শেখ আব্দুর রশিদ, মোল্লা খায়রুল ইসলাম, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম বাবু, সিরাজুল হক নান্নু, আসাদুজ্জামান মুরাদ, শফিকুল আলম তুহিন, এহতেশামুল হক শাওন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
স্বাআলো/এসএ
.
Admin
