
এস আলম তুহিন, মাগুরা : শালিখার হরিশপুর গ্রামের গোলাম কিবরিয়ার মেয়ে গোবরা পঞ্চপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী মিতা বিষপানে আত্মহত্যা করেছে।
গত বুধবার স্কুলে সে বিষপান করে। এসময় তাকে প্রথমে শালিখা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার রাতেই তার মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে তাকে দাফন করা হয়েছে। বখাটের কারণে সে বিষপান করেছে। এ ঘটনায় হুমকির কারণে কোন অভিযোগ বা মামলা করতে সাহস পাচ্ছে না তার পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
গোলাম কিবরিয়া মোবাইল ফোনে জানান, যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি এলাকার সানি ওরফে রাজা নামে এক যুবক ২০১৮ সালে হরিশপুর গ্রামের ভাইয়ের শ্বশুর বাড়িতে যাতায়াতের সুযোগে মিতার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে।
এক পর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মিতাকে ঢাকায় নিয়ে যায় এবং দেহ ব্যবসায়ী চক্রের কাছে বিক্রি করে দেয়। এ ঘটনায় শালিখা থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। পুলিশ ১৫দিন পর ঢাকার কাফরুল এলাকার একটি বাসা থেকে মিতাকে উদ্ধার করে এবং জোরপূর্বক ভাবে দেহ ব্যবসা করানোর অভিযোগে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার কাছিহারা গ্রামের গোলজার শেখের ছেলে নাজমুল শেখ ও বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার খাসতাবক গ্রামের মৃত ইউনুস আলীর স্ত্রী শাহিদা বেগমকে আটক করে। মিতার বাবা গোলাম কিবরিয়া শালিখা থানায় নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে আটক নাজমুল, শাহিদা এবং পলাতক সানি ওরফে রাজার বিরুদ্ধে মামলা করেন। এসময় পুলিশ সানিকে গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয়। পরে নাজমুল শেখ ও শাহিদা বেগম জামিনে মুক্তি পায়। বাড়ি ফিরে মিতা সুস্থ হয়ে আবারো লেখাপড়া শুরু করে। এ বছর অষ্টম শ্রেণিতে ভাল ফলাফল করে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়।
আরো পড়ুন>> মাগুরায় স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যার চেষ্টা
সম্প্রতি সানি ও কামরুল তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা তুলে নেয়ার জন্য মোবাইলে ও বিভিন্ন লোক মারফৎ তাকে চাপ দিতে থাকে। মোবাইল ফোনের পাশাপাশি এলাকায় এসে মাঝে মধ্যে সানি মিতাকে উত্যক্ত করতে থাকে। মামলা তুলে না নিলে তাকে ধরে নিয়ে নির্যাতন ও হত্যার করা হবে বলে ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। তাদের মানসিক এ অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বুধবার সকালে স্কুলে গিয়ে মিতা বিষপান করে।
বিষপানের পর মিতা বার বার বলেছে, ‘সানি-নাজমুল আমাকে বাঁচতে দিলো না’।
গেলাম কিবরিয়া জানান, আত্মহত্যার পর অভিযুক্তরা ‘এটি’ নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে অব্যাহতভাবে তাকে হুমকি দিচ্ছে। এমনকি বাড়ি থেকে বের হতে পর্যন্ত দিচ্ছে না। তাদের ভয়ে তিনি এখনো মামলা করেননি।
শালিখা থানার ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘হরিশপুর গ্রামের স্কুল ছাত্রী মিতার আত্মহত্যার বিয়ষটি তিনি শুনেছেন বলে জানিয়ে বলেন, পরিবার থেকে অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য. ইতোপূর্বে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে মিতা বাবার দায়ের করা মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
স্বাআলো/এম
.
Admin
