
দ্বিপাক্ষিক অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) সই করেছে বাংলাদেশ ও ভুটান। বাংলাদেশকে ভুটানের স্বাধীনতার স্বীকৃতি দেয়ার ঐতিহাসিক দিনে আজ রবিবার এ চুক্তি সই হলো।
নিজ নিজ দেশের পক্ষে চুক্তি সই করেন বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও ভুটানের অর্থবাণিজ্যমন্ত্রী লোকনাথ শর্মা। চুক্তি সই অনুষ্ঠানে গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভুটান প্রান্ত থেকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং যুক্ত ছিলেন।সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে বাণিজ্য বেড়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে দুই দেশের মধ্যে এক কোটি ২৮ লাখ ডলার বাণিজ্য হয়েছিল। ধীরে ধীরে তা বেড়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৭৫ লাখ ডলার।
এর মধ্যে বাংলাদেশ ভুটানে রফতানি করেছে ৭৫ লাখ ৬০ হাজার ডলারের পণ্য। আর ভুটান থেকে বাংলাদেশে আমদানি হয়েছে ৪ কোটি ৯৯ লাখ ডলারের পণ্য। প্রধানত পাথর আমদানি হয় ভুটান থেকে। এই বাণিজ্যের মাধ্যমেই বাংলাদেশ ভুটানের দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানি বাজার।
এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশ ভুটানের বাজারে ১০০টি পণ্যে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পাবে। আর ভুটান বাংলাদেশের বাজারে তাদের ৩৪ পণ্যে একই সুবিধা পাবে।
বর্তমানে সাফটার আওতায় ভুটানকে ১৮টি পণ্যে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা দেয় বাংলাদেশ, বিপরীতে ভুটান দেয় ৯২টি পণ্যে। নতুন চুক্তি কার্যকর হলে বাংলাদেশ ভুটানকে নতুন ১৬টি পণ্যসহ মোট ৩৪টি পণ্যে শুল্ক সুবিধা দেবে। বিপরীতে ভুটানে পাওয়া যাবে ১০২টি পণ্যে শুল্ক সুবিধা। দ্বিপক্ষীয় এই বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের একটি প্রস্তাব এর আগে গত সেপ্টেম্বরে মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেয়া হয়।
আরো পড়ুন>>>‘ভাস্কর্য বিতর্কের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী নিজেই দেখছেন’
ভুটানের পর থাইল্যান্ডের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া আরও ১৭টি দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা চালাচ্ছে সরকার। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও উরুগুয়ে, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, ফিলিস্তিন, ব্রাজিল, চীন, ভারত, পাকিস্তান, সৌদি আরব ও মালয়েশিয়া। এসব দেশের সঙ্গেও নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে এফটিএ শাখাকে শক্তিশালী করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের তথ্য মতে, বাংলাদেশের সঙ্গে এখন ১৯৮টি দেশের বাণিজ্য রয়েছে। এর মধ্যে ৭১টি দেশের সঙ্গে রয়েছে বাণিজ্য ঘাটতি। বিশাল এ ঘাটতি কমাতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে এফটিএ এবং পিটিএ সইয়ের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, সবশেষ ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ৪৩ লাখ ৫৬ হাজার ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে ভুটানে। দেশটির বাজারে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স, আসবাব, তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানি করেন। অপরদিকে দেশটি থেকে বাংলাদেশে আমদানি হয়েছে প্রায় চার কোটি ডলারের পণ্য। এর মধ্যে কমলা, দারুচিনি সবচেয়ে বেশি। এছাড়া বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা ভুটান থেকে চুনাপাথর, পাথর, কয়লাসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করেন।
স্বাআলো/আরবিএ
.
Admin
