নিজ উদ্যোগে বট ও বকুলের চারা গাছ লাগিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মাগুরার প্রকৃতি ও বৃক্ষ প্রেমি আবু ইমাম বাকের। তিনি মাগুরার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ইসাডো’র কর্মকর্তা। ইতোমধ্যে এ কর্মকান্ডের ফলে এলাকায় তিনি বৃক্ষ প্রেমিক ও পরিবেশ কর্মী হিসেবে বেশ পরিচিতি লাভ করেছেন।
গত বর্ষা মৌসুমে জেলায় একাধিক প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন রাস্তার পাশে ১৬০টি বট ও ২০০টি বকুল গাছের চারা রোপণ করেছেন। নিজ জেলায় ৫০০টি করে বট ও বকুল গাছের চারা লাগানো শেষ হলে পার্শ¦বর্তী জেলাগুলোতে এ কর্মকান্ডের বিস্তার ঘটাবেন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, কোন ফসলি ক্ষেত এলাকায় একটি বটগাছ থাকা মানে ওই এলাকার কৃষকরা প্রাকৃতিক ভাবেই তার ক্ষেতে কীটপতঙ্গ দমনের সুবিধা পাবে। কেননা বটগাছকে ঘিরে ব্যাপক সংখ্যক পাখির আনাগোনা হয়ে থাকে। তারা এটিকে খাদ্য ও আশ্রয় স্থল হিসাবে ব্যবহারের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী ক্ষেতগুলোতে গিয়ে কীটপতঙ্গ খেয়ে জীবন ধারণের মধ্যদিয়ে ওই ক্ষেতটিকে কীট মুক্ত করবে।
আরো পড়ুন>>>যুদ্ধজয়ী মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক জীবনযুদ্ধে পরাজিত
আবু ইমাম বাকের জানান, একটি পূর্ণাঙ্গ বটগাছ একলাখ মানুষকে অক্সিজেন সরবরাহ করে। মাটির সর্বোচ্চ গভীরতায় পৌছে পানি শোষণ করায় ভূগর্ভস্থ পানিস্তর নিচে নেমে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। এছাড়া জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি পাখির নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসাবে ফসলে ক্ষেতে প্রাকৃতিকভাবে কীটপতঙ্গ দমনের সহায়ক হিসাবে কাজ করে এই বট ও বকুল গাছ। কৃষি ও পরিবেশের সুরক্ষায় বটের এই নানামাত্রিক উপযোগিতাকে সামনে রেখে গোটা জেলায় ব্যাপক হারে বটগাছ রোপণের উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।
পাখি সব সময়ই চায় সমতল ডাল পালা। কেননা কোন অতিরিক্ত চাপ ছাড়াই সেখানে তারা বসতে পারে। যা কেবলমাত্র বটগাছের রয়েছে। পাশাপাশি বট ও বকুলের ফল পাখির উপোযোগী একটি খাবার। এছাড়া বটগাছের শাখা প্রশাখা ঝুপড়ীর মতো হওয়ায় এটিকে তারা নিরাপদ মনে করতে পারে। অতীতে বিশেষ করে গ্রামীণ জনপদে এই উপযোগিতা মাথায় রেখেই ব্যাপকহারে বটগাছ লাগানো হতো। যা এখন বিলুপ্তপ্রায়।
আবু ইমাম বাকেরকে ২০১৮ সালে মাগুরা সদর উপজেলার পক্ষ হতে বৃক্ষ রোপণে বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননা প্রদান করা হয়।
স্বাআলো/আরবিএ