দৃশ্যমান হচ্ছে হারানো খড়ম

মাগুরা: খড়মের ব্যবহার মানুষ প্রায় ভুলতে বসেছে। তবে হঠাৎ করেই মাগুরা শহরের বিভিন্ন স্থানে এটি বিক্রি করতে দেখে অনেক পথচারি ক্ষণিকের জন্য হলেও দাঁড়িয়ে দেখছেন। কিনেছেন অনেকেই।

পঞ্চাশোর্ধ ইলিয়াস মন্ডল উত্তরবঙ্গ থেকে খড়ম বিক্রি করতে এসেছেন মাগুরায়। তিনি দেশের বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘুরে খড়ম বিক্রি করেন। বেচাকেনা ভালো হওয়ায় বর্তমানে এটিকে তিনি নিয়েছেন পেশা হিসেবে। প্রায় ৭ বছর ধরে তিনি এ পেশায় জড়িত আছেন। এর আগে ইলিয়াস মন্ডল ফেরি করে সিরামিকের বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রি করতেন। ব্যবসার প্রয়োজনে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের সুবাদে ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের আর্টিলারী বড় ব্রিজের পাশে একটি খড়ম তৈরির কারখানা চোখে পড়ে তার। সেখান থেকেই তিনি এ পেশার প্রতি আকৃষ্ট হন। পরবর্তীতে ওই কারখানা থেকে পাইকারি দরে খড়ম কিনে তা দেশের বিভিন্ন জেলায় ফেরি করে বিক্রি করছেন।

ইলিয়াস মন্ডল জানান, বর্তমান সময়ে মানুষ খড়মের ব্যবহার একেবারেই ভুলতে বসেছে। অথচ একসময় ছিল যখন আমাদের মুরব্বিরা পায়ে খড়ম দিতেন। কিন্তু কালের বিবর্তনে চামড়া ও প্লাস্টিকের জুতা স্যান্ডেলের ভীড়ে এক সময়ের ঐতিহ্য এই খড়মের ব্যবহার হারিয়ে যেতে বসেছে। বর্তমান প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা এটির নাম পর্যন্ত জানে না।

মাগুরার প্রকৃতি প্রেমিক আবু ইমাম বাকের

খড়ম তৈরির জন্য প্রয়োজন হয় কাঠালের কাঠ, বাস ও ট্রাকের টায়ার এবং লোহা। এটি দিয়েই ঠাকুরাগাঁওয়ের কারিগররা খড়ম তৈরি করেন। গত কয়েক দিনে মাগুরার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ জোড়া খড়ম বিক্রি করে বেশ মুনাফা পেয়েছেন বলে ইলিয়াস মন্ডল জানান। প্রতি এক জোড়া খড়ম ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি করছে।

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার চামুড়তলা গ্রামের এই খড়ম বিক্রেতা আরো জানান, গ্রামীণ জনপদে ব্যবহৃত এক সময়ের খড়ম দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে বিক্রি করতে তার ভালোই লাগে। সবচেয়ে বড় কথা এটির প্রতি মানুষের যে আকর্ষণ সেটিও আমাকে খড়ম বিক্রিতে আরো বেশি আগ্রহী করে তুলেছে।

স্বাআলো/এসএ