মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, তবু মদ পানে মৃত্যু

আসলে মাদক ব্যবসা থেমে নেই। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও পুলিশ বিভাগকে এর বিরুদ্ধে কঠোর ভূমিকা নিতেও দেখা যাচ্ছে, কিন্তু তারপরও কেন এ অবস্থা তা ভাববার বিষয়। এ দেশে সাধারণত মদ, গাঁজা, আফিম, ভাঙ, ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ আরো কিছু মাদক দ্রব্যের ব্যবসা দেখা যায়। এ সব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ধরছে, ধ্বংস করছে, বহনকারী বা মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে। তবু মাদকের ব্যবহার থামছে না।

মাদক ব্যবসায়ীদের আন্তর্জাতিক যোগসূত্র আছে। ভারত ও মিয়ানমার থেকে মাদক তো আসছে । চট্টগ্রামে প্রায় ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনা ঘটছে। মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে গুলি বিনিময়ে তাদের দু-একজন মারাও যাচ্ছে। আর যশোরের বেনাপোল সীমান্তে গাঁজা, ফেনসিডিল ধরা পড়ছে তো সকাল-বিকাল। প্রকৃত মালিক রয়েছে ধরা ছোয়ার বাইরে। অবশ্য বিজিবি কমান্ডার বলেছেন, এর পেছনে কারা জড়িত তা শনাক্তের চেষ্টা চলছে। সাদিপুরে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় রয়েছে মাদক চোরাচালানের হোতারা। তারাই ভারত থেকে বড় বড় চালান নিয়ে আসছে। কিছু ধরা পড়লেও দেশের অভ্যন্তরে ঢুকে যাচ্ছে।

আমরা মনে করি অহেতুক চুনো পুটির পেছনে দৌড়িয়ে মাদক দমনের কাঙিক্ষত সফলতা পাওয়া যাবে না, যতক্ষণ না এর হোতাদের দমন না করা যাবে। যারা দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে, মানুষের অকল্যাণে মাদকের ব্যবসা করেও সমাজের মধ্যমণি হয়ে হয়ে বসে আছে তাদের কালো হাত আগে ভাংতে হবে। মাদক ব্যবসার পালের গোদার পিঠে বাড়ি পড়লে চুনোপুটি মাদকাসক্তদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাবে না। যদি পালের গোদারা নির্বিঘœ থাকে তা হলে শত প্রতিকুলতার মধ্যেও মাদক তৃণমূলে চলে যাবে। মাদক সেবীরাতো হিতাহিত জ্ঞান শূন্য মানুষ নামের অদ্ভুত প্রাণি। তারা মাদক ব্যবহার করে ধরা পড়লে তাদের জীবন শেষ এ কথাটি তাদের মাথায় থাকে না। এ ক্ষেত্রে আমাদের কথা হলো মাদকের শীর্ষের শক্তিকে আগে প্রতিহত করা হোক।

মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষিত হলেও এবারের থার্টি ফার্স্ট নাইটে মাদক নিয়ে মাতামাতি হলো বেশ। মিডিয়ার খবর অনুযায়ী ওই রাতের অনুষ্ঠান থেকে পলিশ কয়েকজন মদ্যপকে গ্রেফতার করেছে। তবে রাজশাহীতে নতুন বছর উদ্যাপন উপলক্ষে মদপানে পাঁচ তরুণের মৃত্যুর খবরটি চাঞ্চল্যকর। অনুষ্ঠানের রাত থেকে পরের দিন রাত সোয়া ৮টা পর্যন্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ১৬ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।এ ছাড়াও হেঁতেম খার কলপ (২২) নামে একজনের অবস্থা সংকটাপন্ন।

মৃতরা হলো, নগরীর হোসনীগঞ্জের ফাইসাল (২৮), বাগমারা উপজেলার শান্তাপাড়ার সজল (২৫), নগরীর বাকির মোড়ের সাগর (২৫) ও হেঁতেম খার তুহিন (২৬) ও নগরীর কাদিরগঞ্জের মুন আহম্মেদ (২২)।

রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান, সাত জন তথ্য গোপন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। তারা নতুন বছরের অনুষ্ঠানে তারা মদ খেয়েছিল। এটা তারা পরিবারের কাছে গোপন রাখে। পেট ব্যথা ও অন্যান্য সমস্যার কথা বলে হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরে মদ খাওয়ার কথা জানায়।