শিক্ষকরা কিন্তু পিতৃতূল্য। এ কথাটি ভুলে আজ তারা ছাত্রীদের সাথে অনৈতিক আচরণ করছেন। এতে সমাজে শিক্ষক সমাজের বিরুদ্ধে অভিভাবকরা বিশ্বাস হারাচ্ছেন। এ অবস্থা যদি চলতে থাকে তাহলে শিক্ষার অবস্থাটা যে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শিক্ষকের বিরুদ্ধে সর্বশেষ ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘঠেছে নারায়ণগঞ্জে।ওই জেলার ফতুল্লায় দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৬) যৌন নিপীড়নের অভিযোগে কোচিং সেন্টারের শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ৩ জানুয়ারি বিকেলে নিজের কোচিং সেন্টার থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
শিক্ষকের নাম বিভাস সরকার (৪০)। তার বাড়ি ফতুল্লার দাপা ইদ্রাকপুর ব্যাংক কলোনী পাড়ায়। ফতুল্লার দাপা রেল স্টেশন এলাকার মুন্না ফার্মেসি সংলগ্ন একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় তার কোচিং সেন্টার রয়েছে। ভুক্তভোগী ছাত্রীও এই কোচিংয়ে পড়তো। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী নিজে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা করেছে। অভিযুক্ত কোচিংয়ের শিক্ষক ভুক্তভোগী ছাত্রীকে বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিতো। পরে কোচিং সেন্টারে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। গত দুই মাস যাবৎ কোচিংয়ে যায় না ওই ছাত্রী। কোচিংয়ের শিক্ষক বিভাস সরকার ছাত্রীর মাকে ফোন করে তাকে কোচিং সেন্টারে পাঠাতে বলেন।
৩ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটার দিকে কোচিং সেন্টারে এসে ওই ছাত্রী দেখে সেখানে অন্য কেউ নেই। পরে বাসায় ফিরে আসতে চাইলে বিভাস সরকার কোচিং সেন্টারের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে ওই ছাত্রীকে জড়িয়ে ধরে যৌন নিপীড়ন করে। এক পর্যায়ে ছাত্রীর খালাত ভাই জিহানকে ফোন করা হলে সে তাকে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে যায়।
আরো পড়ুন>>>মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, তবু মদ পানে মৃত্যু
শিক্ষকদের কেউ কেউ হয়তো পারেন বিভাস সরকার তো নিয়মিত শিক্ষক নয়। তিনি কোন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন না। তার অপরাধের অপবাদ নিয়মিত শিক্ষকরা নেবেন কেন? এ কথা অযৌক্তিক নয়। কিন্তু নিয়মিত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ প্রায় শোনা যায়। আর মাদরাসার নিয়মিত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তো অভিযোগের অন্ত নেই।
অবস্থাটা এখন এমন এক পর্যায়ে গেছে যে আদর্শ শিক্ষকরা মাথা উঁচু করে কথা বলতে পারছেন ননা। নিয়মিত অনিয়মিত যে শ্রেণির শিক্ষকই হোক না কেন তাদের বিরুদ্ধে ন্যুনতম অনৈতিকতার অভিযোগ পাওয়া গেলে তাদেরকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ তাদের ওপর নির্ভর করে। তারা যদি নিজেরাই নষ্ট হন তাহলে তাদের হাত দিয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে কেউ বেরুতে পারবে না।
স্বাআলো/আরবিএ