রাজধানীর দক্ষিণখানে মুন্সি মার্কেট এলাকায় আট মাসের শিশুকে আছাড় দিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে শিশুটির বাবার বিরুদ্ধে। স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ার একপর্যায়ে মায়ের কোল থেকে নিয়ে শিশুটিকে একাধিকবার ফ্লোরে আছাড় দেয় তার বাবা। হত্যার অভিযোগ পেয়ে শিশুটির বাবা রফিকুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত শিশুর নাম আবদুল কাদের জিলানী রাব্বি। ৪ জানুয়ারি দুপুরের দিকে এই ঘটনা ঘটেছে।
দক্ষিণখান থানার ওসি (অপারেশন) আফতাব উদ্দিন শেখ জানান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রফিকুল রিকশাচালক। রাব্বী তাদের একমাত্র সন্তান। মুন্সীহাটি এলাকায় একটি বাসায় ভাড়া থাকে। অভাব-অনটনের সংসারে চার মাসের বাড়ি ভাড়া বাকি পড়ে যায়। বাড়িওয়ালা ভাড়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। একপর্যায়ে তাদের বের করে দেয়।
৪ ডিসেম্বর সকালে মুন্সি মার্কেট এলাকায় শিশুটির ফুফুর বাসায় ওঠে তারা। সেখানেও স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে রফিকুল শিশুটিকে একাধিকবার ফ্লোরে আছাড় দেয়।
কি যে হচ্ছে দেশটাতে তা ভাবাই যাচ্ছে না। প্রেম-প্রীতি, স্নেহ-মমতা, আদর-আহ্লাদ, সম্মান-শ্রদ্ধা সবই যেন উঠে যাচ্ছে। সবখানেই যেন একটা নিষ্ঠুরতার ভাব, স্বার্থের টানাটানি। এত কিছুর পরও সন্তান বৎসল বলে একটা বিষয় ছিল। সন্তানের জন্য একজন নিষ্ঠুর মাতা-পিতাও অনেক কিছু ত্যাগ করেছে। কিন্তু হাল আমলে দেখা যাচ্ছে তার কিছু উল্টো দিক। পিতা তার কলিজার টুকরো ছেলেকে আছাড় দিয়ে হত্যা করছে। সংবাদপত্রে শিরোনাম হলো আর এক নির্মমতার কথা। কি জানি মানুষ আস্তে আস্তে বন্য হয়ে যাচ্ছে কিনা।
আরো পড়ুন>>>পিতৃতূল্য শিক্ষকদের এ কি আচরণ
সন্তানের জন্য মা-বাবা আল্লাহর দরবারে নিজের জীবনের বিনিময় মঙ্গল কামনা করে। সন্তানের মঙ্গলময় ভবিষ্যতের জন্য বাবা তার জীবনের সব আরাম-আয়াশ তুচ্ছ মনে করে যথা সর্বস্ব ত্যাগ করে দিনান্ত ছুটে চলে। সেই বাবাদের একজনই তো রফিকুল। সে কোন বিবেকে এই জঘন্যতম কাজটি করতে পারলো তা সভ্য সমাজের মানুষের ধারণার বাইরে। আসলে এরা মানুষ নামের অমানুষ। পারিবারিক কলহের কারণে নিজের সন্তানকে যে বাবা হত্যা করতে পারে সেই বাবার পক্ষে এর চেয়েও অনেক বড় ধরনের অপরাধ করা অসম্ভব নয়। রফিকুলের শাস্তি শুধু সন্তান হত্যার জন্য করলে হবে না। এমন শাস্তি দিতে যা সুদীর্ঘ কাল একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। কিন্তু সমস্যা হলো, এর পরও দেখা যাবে দলবাজির কারণে কেউ না কেউ ওই নরাধমের পাশে দাঁড়িয়ে মানবাধিকারের কথা বলে বুলি আওড়াবে।
আমরা মনে করি, যে প্রথমে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে তার ক্ষেত্রে মানবাধিকর নিশ্চিত করার কোনো সুযোগ নেই। যত রকম কঠিন শাস্তিই থাকুক না কেনো রফিকুলের ক্ষেত্রে তা কার্যকর হোক। তার মতো বন্য হায়েনারা দেখে ভাবুক এ সমাজে দুর্বত্তের স্থান নেই। সমাজের সর্বস্তর থেকে প্রতিবাদ উঠুক, সবাই একাট্টা হয়ে দাবি তুলুক রফিকুলদের আমরা দেখতে চাইনে। এ সমাজে তাদের স্থান নেই।
স্বাআলো/আরবিএ