ভারতীয় পেঁয়াজে আগ্রহ নেই ক্রেতাদের, বিপাকে ব্যবসায়ীরা

বাজারে উঠতে শুরু করেছে দেশি পেঁয়াজ। চলছে ভরা মৌসুম। এদিকে, গত সাড়ে তিন মাস বন্ধ থাকার পর আবার পেঁয়াজ পাঠাতে শুরু করেছে ভারত। এতে বিপদে পড়েছেন দেশি কৃষকরা। তবে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি করে স্বস্তিতে নেই আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা। বাজারে এখন খুব বেশি চাহিদা নেই ভারতীয় পেঁয়াজের।

বাজারে দেশি পেঁয়াজের চাহিদা বেশি, দামও কম। আর তুলনামূলক বেশি দাম হওয়ায় মানুষ ভারতীয় পেঁয়াজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর হঠাৎ করেই পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারত সরকার। এরপর চলতি বছরের শুরুতে (২ জানুয়ারি) থেকে অন্যান্য বন্দরের মতো সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়েও ভারতীয় পেঁয়াজ আসতে শুরু করে দেশে।

আরো পড়ুন>>> পেয়াজ বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান

পেঁয়াজের বড় পাইকারি বাজার সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড়বাজার। সেখানকার আড়তদার মেসার্স সাকিব এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আক্তারুজ্জামান আক্তার জানান, বাজারে এখন দেশি পেঁয়াজ পাইকারি দরে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৭-২৮ টাকায় আর খুচরা প্রতি কেজি ৩০ টাকা।

মেহেরপুর জেলায় উৎপাদিত পেঁয়াজের দাম আরো কম। সেগুলো বিক্রি হচ্ছে পাইকারি ২০-২২ টাকা ও খুচরা ২৫ টাকা। হল্যান্ডের পেঁয়াজ পাইকারি ১৯-২০ টাকা, খুচরা ২০-২১ টাকা। কিন্তু, ভারতীয় পেঁয়াজ পাইকারি ৩৬-৩৭ টাকা ও খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।

তিনি আরো জানান, ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে না। এগুলো কিনে আড়তে রেখে লোকসানে পড়েছি। ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৩৯ টাকা দরে কিনে আমি বিক্রি করছি ৩৫ টাকায়। তবুও মানুষ কিনছে না। আড়তে ২০০ বস্তা পেঁয়াজ নিয়ে এখন বিপদে পড়েছি।

আরো পড়ুন>>> সাতক্ষীরায় সড়কে ঝরলো তিন শ্রমিকের প্রাণ

ভোমরা সহকারী কমিশনারের কার্যালয়ের রাজস্ব কর্মকর্তা আকবার আলী জানান, গত ২ জানুয়ারি থেকে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোমরা বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ২০৪১ দশমিক ৮ মেট্রিক টন।

ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস ও দফতর বিষয়ক সম্পাদক জিএম আমির হামজা জানান, চাহিদা না থাকায় আমদানি করে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে জানা গেছে, জেলায় চলতি মৌসুমে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে ৬২০ হেক্টর জমিতে। গত বছর চাষাবাদ হয়েছিলো ৫৫৫ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে ৬৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ বেশি হয়েছে। জেলায় চলতি মৌসুমে উৎপাদন হয়েছে ৬ হাজার মেট্রিকটন পেঁয়াজ। চাহিদা রয়েছে ২০-২২ হাজার মেট্রিকটন।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম জানান, দেশে যখন সবজি উৎপাদন মৌসুম চলছে ঠিক তখনই আবারো ভারত থেকে আসছে পেঁয়াজ। এতে দেশি কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। মৌসুম নয় এমন সময় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলে কৃষকরা লাভবান হতে পারতো।

স্বাআলো/এস