বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন স্মরণে ডাকটিকিট প্রকাশ

১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখেন ১০ জানুয়ারি। ঐতিহাসিক এই দিনটি স্মরণে ডাক অধিদফতর স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও ডাটাকার্ড প্রকাশ করেছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার রবিবার তার দফতরে এ বিষয়ে ১০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক ডাকটিকিট ও দশ টাকা মূল্যমানের একটি উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত করেন। এছাড়া পাঁচ টাকা মূল্যমানের একটি ডাটাকার্ড এ সময় উদ্বোধন করা হয়। মন্ত্রী এ বিষয়ক একটি সিলমোহর ব্যবহার করেন। তিনি দিবসটির ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরে বিবৃতি দিয়েছেন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বিবৃতিতে বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধের মহান বিজয় পূর্ণতা পায়। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর বাংলাদেশ প্রবেশ করে আলোকিত অভিযাত্রায়।

মানুষকে জিম্মি ও হামলা করার রাজনীতি বন্ধ করুন: বিএনপিকে তথ্যমন্ত্রী

তিনি মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঘোষিত নির্দেশনায় বাঙালি একদিকে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছে, অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু তখন পাকিস্তানের কারাগারে প্রহসনের বিচারে ফাঁসির আসামি হিসেবে কবরের পাশে মৃত্যুর প্রহর গুনছিলেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাঙালিদের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হওয়ার পর বিশ্বনেতারা বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। পরাজিত পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আন্তর্জাতিক চাপে শেষ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুকে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ২৯০ দিন পাকিস্তানের কারাগারে মৃত্যুর প্রহর গণনা শেষে লন্ডন থেকে দিল্লি হয়ে তিনি ১০ জানুয়ারি ঢাকায় পৌঁছেন।

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের মানুষের আবেগ এবং সে সময়কার ঢাকার চিত্র তুলে ধরে বিবৃতিতে বলা হয়, তেজগাঁও বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী বিমানটি অবতরণ করার পর খোলা গাড়িতে দাঁড়িয়ে জনসমুদ্রের ভেতর দিয়ে রেসকোর্স ময়দানে পৌঁছাতে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগে।

সেদিনের মানুষের অনুভূতি বর্ণনা করে বলা হয়, রেসকোর্স ময়দান ছিল লোকারণ্য। জয়বাংলা, জয়বঙ্গবন্ধু স্লোগানে স্লোগানে আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত হয়েছিল সেদিন বিজয়ের আনন্দগীতিধারার মূর্ছনায়। বাঙালির হৃদয়ের মুকুটবিহীন সম্রাট বঙ্গবন্ধুও সেদিন বাংলার মাটিতে পা দিয়েই আবেগে কেঁদেছিলেন। বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১৭ মিনিট জাতির উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন।

স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম এবং ডাটাকার্ড রবিবার থেকে ঢাকা জিপিওর ফিলাটেলিক ব্যুরো থেকে এবং পরে দেশের অন্যান্য জিপিও ও প্রধান ডাকঘর থেকে সংগ্রহ করা যাবে।

স্বাআলো/এসএ