রংপুরের ছকিনা যেন রসুলপুরের আসমানীর প্রতিচ্ছবি

পল্লী কবি জসিমউদ্দিনের কবিতা ‘আসমানীদের দেখতে যদি তোমরা সবে চাও, রহিমুদ্দিনের ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও।’

কবির সেই আসমানীর প্রতিচ্ছবি যেন রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পূর্ব দেবু গ্রামের ছকিনা বেগম। মাথা গোজার নির্ভরযোগ্য ঠাই নেই তার। অভাব-অনটনে তার জীবন।

ভিটেমাটিহীন ছকিনা বেগম সুখের আশায় ১৮ বছর আগে বিয়ে করেছিলেন আরেক ভূমিহীন রফিকুল ইসলামকে। কিন্তু সুখ তাদের কপালে জোটেনি। অভাব-অনটনে দিন পেরিয়ে গেলেও আজো জোটেনি সরকারি সুযোগ-সুবিধা। অন্যের জমিতে কাটাতে হচ্ছে জীবন। বর্তমানে অসুস্থ স্বামী, তিন সন্তান এবং বৃদ্ধ শাশুড়ীকে নিয়ে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন ছকিনা বেগম।

ছকিনা বেগম তার বৃদ্ধ শাশুড়ীকে নিয়ে অন্যের জমিতে কাজ করেন। অসুস্থ স্বামী রফিকুল ইসলাম বাড়িতে থাকেন । ছোট একটি কুড়ে ঘর থাকলেও তাতে নেই কোন বেড়া। হু-হু করে ঢুকছে হিমেল বাতাস। বর্ষায় পানিতে নাস্তানাবুদ হতে হয় সকলকে।

ছকিনার স্বামী রফিকুল ইসলাম গত ৬ মাস থেকে অসুস্থ। তার মেরুদন্ডের হাড় ক্ষয় হয়ে যাওয়ায় হাটাচলা করতে পারেন না। গত ২৯ ডিসেম্বর রফিকুল ইসলামের বাবা অসুস্থ কছিম উদ্দিন বিনা চিকিৎসায় মারা যান। তাকে দাফন করা হয় স্থানীয় মসজিদের কবরস্থানে। সেজন্য একমাত্র ছোট বাছুর গরু বিক্রি করে মসজিদ কমিটিকে দিতে হয়েছে ৫ হাজার টাকা।

আরো পড়ুন>>>রংপুরে ৪ লাখ কৃষক সহায়তা পাচ্ছে

ছকিনা বেগম বলেন, অর্থের অভাবে বিনা চিকিৎসায় আমার ভাসুর ও শ্বশুর মারা গেছে। এখন স্বামী মৃত্যুর পথযাত্রী। তিন সন্তান নিয়ে কি করবো ভেবে পাচ্ছিনে। কাল কি খাব তাও জানিনে।

তাম্বুলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রওশন জমির রবু সরদার বলেন, ওই গ্রামের যদি কেউ তাকে জমি দান করেন, তাহলে পরবর্তী তালিকায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঘর করে দেয়া হবে।

স্বাআলো/আরবিএ