খুলনা বিভাগের সাত পৌরসভায় নৌকা, একটিতে মশাল জয়ী

উৎসবমুখর পরিবেশে খুলনা বিভাগের আট পৌরসভায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত সাতজন এবং জাসদের একজন প্রার্থী মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। শনিবার ভোটগ্রহণের পর গননা শেষে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা বেসরকারিভাবে এই ফলাফল ঘোষণা করেন।

তবে বাগেরহাটের মংলায় সকালে আর মেহেরপুরের গাংগী পৌরসভায় দুপুরে বিএনপির প্রার্থীরা ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।

শনিবার বিভাগের কুষ্টিয়া জেলার চারটি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ করা হয়। এই নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের তিনজন ও একটিতে জাসদের প্রার্থী মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।

কুষ্টিয়া পৌরসভার বর্তমান মেয়র আওয়ামী লীগের আনোয়ার আলী, মিরপুর পৌরসভার বর্তমান মেয়র আওয়ামী লীগের এনামুল হক, কুমারখালী পৌরসভার বর্তমান মেয়র আওয়ামী লীগের শামুসুজ্জমান অরুন আবারো মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তারা সবাই নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন। এছাড়া জেলার ভেড়ামারা পৌরসভায় মেয়র পদে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ মনোনীত আনোয়ারুল কবির টুটুল মশাল প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।

আমাদের ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানান, ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজী আশরাফুল আজম জয়ী হয়েছেন। তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে ৯ হাজার ৮৪৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নিজয়ী হন। এই নিয়ে তিনি তৃৃতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হলেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী তৈয়বুর রহমান খান বাবু জগ প্রতীকে পেয়েছেন সাত হাজার ২৬৫ ভোট।

                  দ্বিতীয় ধাপের ৬০ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়জয়কার

শনিবার আতঙ্কের মধ্যেও উৎসবমুখর পরিবেশে ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। দুটি কেন্দ্র্রে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটলেও বাকি ১৩ কেন্দ্রে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচনে সকাল থেকে ভোট কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। ভোটের মাঠে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল বেশি।

আমাদের বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, জেলার মোংলা পোর্ট পৌরসভায় আওয়ামী লীগের শেখ আব্দুর রহমান বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি নৌকা প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ১১ হাজার ৫৮৮টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী জুলফিকার আলী পেয়েছেন মাত্র ৫৮২ ভোট। প্রথমবারের মতো এই পৌরসভায় ইভিএম-এ ভোটগ্রহণ করা হয়। ভোট পড়েছে ৩৯ শতাংশ। তবে শনিবার সকালে ভোট শুরুর দুই ঘণ্টার মাথায় কেন্দ্র দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে বিএনপির মেয়র প্রার্থীসহ দলীয় কাউন্সিলর প্রার্থীরা ভোট বর্জন করেন।

মোংলা উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটাররা তাদের ভোট প্রদান করেন। ভোট শেষে প্রাপ্ত ফলাফলে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা শেখ আব্দুর রহমান ১১ হাজার ৫৮৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা জুলফিকার আলী পেয়েছেন ৫৮২ ভোট।

এছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর পদে কবির হোসেন, শরিফুল ইসলাম, বাহাদুর মিয়া, শফিকুর রহমান, শরিকুল ইসলাম, জিএম আল আমিন, হুমায়ূন হামিদ নাসির, সরোয়ার হোসেন ও মজনু গাজী এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে জাহানারা চানু, জোহরা বেগম ও শিউলি আকন নির্বাচিত হয়েছেন।

আমাদের মাগুরা প্রতিনিধি জানান, শনিবার মাগুরা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী খুরশীদ হায়দার টুটুল নৌকা প্রতীক নিয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৪৬৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী ইকবাল আখতার খান কাফুর ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ছয় হাজার ৭৩ ভোট। অপর মেয়র প্রার্থী ইসলামী আন্দোলনের মশিউর রহমান হাতপাখা প্রতীকে পেয়েছেন তিন হাজার ৩৪৫ ভোট।

আমাদের মেহেরপুর প্রতিনিধি জানান, জেলার গাংনী পৌরসভা নির্বাচনে সরকার দলীয় প্রার্থী আহম্মেদ আলী নৌকা প্রতীক নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৯ হাজার ৪৬৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান মেয়র স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল ইসলাম পেয়েছেন দুই হাজার ৬৫১ ভোট।

তবে দুপুরে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আছাদুজ্জামান বাবলু, স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল ইসলাম, আনারুল ইসলাম ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের আবু হুরাইরা ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।

স্বাআলো/এসএ