ঠাটবাটে জমিদার পেশাহীনদের বেশিরভাগ চাঁদাবাজ

রাজধানীর একটি খবর পুলিশ প্রকাশ করেছে। খবরটি হলো, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। এ চিত্র কিন্তু শুধু ঢাকার নয়, চাঁদা সন্ত্রাসীরা  সারা দেশে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আয়-রোজগারের সাথে যুক্ত নয় অথচ এসব দৃর্বৃত্তা চলে বেজায় ঠাটবাটে। দেখলে মনে হবে জমিদারীঠারী কিছু আছে। বাহারী মোটরসাইকেলে অহেতুক ঘুরে বেড়ায়। নেতাদের সাথে খুবই দহরম মহরম।  নির্বাচন একটা আসলে যে কোন নেতার সাথে এমন মাখামাখি করবে যে মনে হবে দলের শীর্ষ পর্যায়ের কোন নেতাটেতা হবে। আসলে কিছুই না। তারা এসব করে মানুষের চোখে ধুলো দিতে চায় ক্ষমতাধর নেতা বলে। দুঃখজনক বিষয় হলো সাধারণ মানুষ তাদেরকে চিনলেও নেতারা চেনেন না। আসল বিষয় হলো নেতারা চেনেন ঠিকই। কিন্তু আধিপত্য বিস্তারের স্বার্থে তাদেরকে শেল্টার দেন। আর এতেই হচ্ছে যত বিপত্তি।

রাজধানীর ঘটনাটি হলো এক ব্যবসায়ীর অভিযোগের ভিত্তিতে ১৫ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী, মতিঝিল, তুরাগ ও পল্টন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের নিযন্ত্রণাধীন সেভেন স্টার গ্রুপের সদস্য পরিচয়ে ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছিল। শুধু জিসান নয়, তারা বিদেশে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নামে বিভিন্ন ব্যক্তিকে হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করে। ১৬ জানুয়ারি দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির গণমাধ্যম শাখার ডিসি (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) ওয়ালিদ হোসেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলো বেলাল খান, রাকিব খান টুটুল, আব্দুল হান্নান, দেলোয়ার হোসেন, সোহাগ, খোরশেদ আলম। তাদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, সিম কার্ড ও টেলিফোন ডায়েরি উদ্ধার করা হয়েছে।

আরো পড়ুন>>>মসজিদ নিয়ে হত্যা ধর্মের নামে ভণ্ডদের হিংস্রতা

ডিসি ওয়ালিদ হোসেন বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান গ্রুপ, সেভেন স্টার গ্রুপ, ফাইভ স্টার গ্রুপ নামে লোকজনদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি করছিল চক্রটি। তাদের টার্গেট নারায়ণগঞ্জ, মাদারীপুর ও বরিশালের লোকজন। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, মাদক ও চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। সর্বশেষ চাঁদাবাজির শিকার এক ব্যবসায়ীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরো জানান, এ চক্রে ৮/১০ জন সদস্য রয়েছে। তারা তিন ধাপে চাঁদাবাজি করছিল। প্রথম ধাপে চক্রটি নীলক্ষেতসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে টেলিফোন ডায়েরি সংগ্রহ করে। সেই ডায়েরি থেকে বিভিন্ন ব্যক্তিদের টার্গেট করে। আরেকটি গ্রুপ নম্বরগুলোতে ফোন করে ভয়-ভীতি দেখিয়ে বিকাশ ও নগদ নম্বরে টাকা পাঠাতে বলে। তৃতীয় ধাপে চক্রটি টাকা সংগ্রহ করে। এই চক্রের মূল হোতা বেলাল খান ও রাকিবুল খান টুটুল প্রকাশনা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

পেশাহীনদের অহেতুক ঠাটবাটে ঘুরে বেড়ানো তরুণদের বেশিরভাগ সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ছিনতাইকারী প্রভৃতি অপরাধের সাথে জড়িত। এদের প্রতি প্রশাসন সতর্ক দৃষ্টি রাখলেই তারা অপরাধের প্রমাণসহ ধরা পড়বে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতাদের উচিত হবে তাদের শেল্টার না দেয়া। উঠতি এসব তরুণরা যেভাবে বিপথে চলছে তাতে দেশের মানুষের শান্তি-স্বস্তি বলতে কিছুই থাকবে না।

স্বাআলো/আরবিএ