আওয়ামী লীগের একটি জেলার কর্মসূচি। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন একজন মন্ত্রী। ঐ অনুষ্ঠানেই বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয় আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্যকে। মন্ত্রী রাজনীতি এবং বয়সে প্রেসিডিয়াম সদস্যের চেয়ে অনেক জুনিয়র। অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পত্র পেয়ে বিব্রত হোন প্রেসিডিয়াম সদস্য। তিনি লজ্জায় আর অনুষ্ঠানে যান নি। এ বিষয়টি পরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সভাপতির কানেও যায়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ঐ কর্মসূচির ধরন সম্পর্কে জানতে চান। তাকে জানানো হয়, এটি ছিলো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচিতে কেনো মন্ত্রী প্রধান অতিথি হবেন? জেলা নেতৃবৃন্দ জানান, মন্ত্রী থাকলে নিউজ কভারেজ ভালো হয়।
দুই নেতার কর্মকাণ্ডে বিব্রত আওয়ামী লীগ
কিন্তু আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জানিয়ে দেন, সরকারি কর্মসূচি হলে সেটি আলাদা কথা, সেখানে সরকারি প্রটোকল অনুসরণ করা হবে। কিন্তু দলীয় কর্মসূচিতে অবশ্যই প্রেসিডিয়াম সদস্য সবার ওপরে প্রাধান্য পাবেন। এখানে নেতৃত্বের সিনিয়রিটি প্রাধান্য পাবে। কে মন্ত্রী, কে এমপি দেখা হবে না। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের সিনিয়রিটি অনুযায়ী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পরই প্রেসিডিয়াম, এরপর সম্পাদক মণ্ডলী। একই অনুষ্ঠানে যদি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং মন্ত্রী থাকেন, আর মন্ত্রী যদি প্রেসিডিয়াম সদস্য না হোন, তাহলে প্রেসিডিয়াম সদস্যই হবেন প্রধান অতিথি। ভবিষ্যতে এধরনের ব্যত্যয় যেন না হয় এ ব্যাপারে একটি নির্দেশনা সারাদেশে আওয়ামী লীগের জেলা ও উপজেলাতে পাঠাতে হবে বলেও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নির্দেশনা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্র মতে, শুধু কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ নয়, একটি জেলার অনুষ্ঠানে যদি জেলার সভাপতি প্রবীণ হোন, তাহলে মন্ত্রী/এমপিদের চেয়েও তাকে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দিতে হবে।
আওয়ামী লীগে কার ওপরে কে, এনিয়ে সংকট তৈরী হয়েছে। সরকার এবং দলকে আলাদা করার নীতির ফলে এখন সাধারণ সম্পাদকসহ মাত্র দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্য মন্ত্রী। স্থানীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক কর্মসূচীতে ইদানিং মন্ত্রীদের আনার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এখানে প্রেসিডিয়াম সদস্যকে বিশেষ বক্তা বা বিশেষ অতিথি করা হচ্ছে। অনেক স্থানেই দলের সম্পাদক মণ্ডলীরা মন্ত্রী/এমপিদের চাপে দলীয় কর্মসূচীতে অপাংক্তেয় হয়ে থাকেন। আওয়ামী লীগ এই অস্বস্তি দূর করতে সাংগঠনিক নির্দেশনাই তৈরী করতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
স্বাআলো/এসএ