‘নিম তিতা, নিসিন্দা তিতা, তিতা মাকাল ফল/তার চেয়ে অধিক তিতা দুই সতীনের ঘর’।গ্রাম্য গানের ভাবার্থকে উল্টে দিয়ে এবার বগুড়ার শিবগঞ্জে ঘটল ব্যতিক্রম ঘটনা।
শিবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মাজেদা বেগম। আর তার জয়ের জন্য ভোটারদের কাছে দিনরাত ভোট চাচ্ছেন সতীনরা।
তিন সতীন একইসঙ্গে ভোট চাওয়ায় ভোটারদের মধ্যেও আগ্রহের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কয়েকজন ভোটার বলেছেন, বর্তমানে সতীনদের মধ্যে মুখ দেখাদেখি পর্যন্ত হয় না, এর মধ্যে এক সতীনের জয়ের জন্য আরো দুই সতীন অক্লান্ত পরিশ্রম করে ভোট চাওয়ার বিষয়টি একটি বিরল ঘটনা।
একাধিক ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সংরক্ষিত ওয়ার্ড থেকে ‘আনারস’ প্রতীক নিয়ে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মাজেদা বেগম। প্রতিদিন ভোরে নির্বাচনী প্রচারণায় বের হন তিন সতীন মিনু বেগম, রেনু বেগম ও মাজেদা বেগম। তাদের সঙ্গে স্বামী আব্দুস সামাদও থাকেন। জয়ের আশায় গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন।
আরো পড়ুন>>>যে ৪ ওষুধে সুস্থ হলেন বগুড়ার করোনা রোগী
বন্তেঘরী গ্রামের ভোটার ফজলুর রহমান বলেন, সতীন মানেই যে খারাপ কিছু নয় তা আব্দুস সামাদের স্ত্রীরা প্রমাণ করেছেন। তাদের এ তিন সতীনের প্রচারণা ভোটারদের মাঝে আলাদা একটা উৎসাহ নিয়ে এসেছে। মাজেদা বেগম এখন এ পৌরসভার আলোচিত প্রার্থী।
প্রার্থী মাজেদা বলেন, আমাদের আলাদা আলাদা হাঁড়ি। কিন্তু সবাই আপন বোনের মতো। শুধু ভোট নয়, সুখে-দুখে আমরা একে অন্যের পাশে দাঁড়াই।
তিনি বলেন, সতীন মানেই শত্রু মনে করা হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে আমি সৌভাগ্যবান। সতীনরা আমার কাছে বোনের মতো। অতি আপনজন। আমি নির্বাচিত হতে পারলে এলাকায় নারী নির্যাতন ও বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে সক্রিয় ভূমিকা রাখবো।
আব্দুস সামাদ বলেন, আমার স্ত্রীদের নিয়ে আমি খুশি। তারা মিলেমিশে সব সমস্যা মানিয়ে নিতে পারে। আর তাদের এ মধুর সম্পর্কের কথা ভোটাররা জানতে পেরে সবাই অনেক খুশি।
আব্দুস সামাদের চার স্ত্রীর। এর মধ্যে বড় স্ত্রী সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি করার জন্য নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে পারছেন না। তবে এতে তার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। তিনি টাকা পয়সা দিয়ে সহযোগিতা করছেন। মাজেদা বেগম বর্তমানেও ওই সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করছেন। গতবারেও একইভাবে প্রচারণা চালিয়ে তারা ভোটারদের মন জয় করেছিলেন।
স্বাআলো/আরবিএ