‘বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ অঙ্গীকার বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে আগামীকাল শনিবার দেশের ৬৬ হাজার ১৯৮টি গৃহহীন, ভূমিহীন পরিবারকে পাকা ঘর ও জমির দলিল হস্তান্তর করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঘর হস্তান্তর কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। আগামী দুই বছরের মধ্যে পর্যায়ক্রমে দেশের প্রায় ৯ লাখ গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে ঘর ও জমি দেয়া হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মাহবুব হোসেন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) আহসান কিবরিয়া।
করোনা টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী, প্রথম দিন পাবেন ২০-২৫ জন
মুখ্য সচিব বলেন, পৃথিবীতে এভাবে সরকারি উদ্যোগে পুনর্বাসন করার কোনো নজির নেই। সব বাড়িতেই বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব বাড়িতে যেসব পরিবার থাকবে, তাদের আয়-উপার্জনের জন্য প্রশিক্ষণ ও ঋণ বিতরণ কর্মসূচিও নেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নকশা অনুমোদন করার পর সারাদেশে একই রকমের ঘর নির্মাণকাজ শুরু হয়। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও গত ছয় মাসে ৬৬ হাজার ১৯৮টি গৃহনির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। যাদের জমি আছে, কিন্তু ঘর নেই, তাদের নিজস্ব জমিতে এবং যাদের জমি নেই, তাদের ২ শতাংশ পরিমাণ খাসজমিতে ঘর নির্মাণ করে দেয়া হচ্ছে।
গৃহহীনদের এভাবে ঘর দেয়ার ঘটনাকে অভূতপূর্ব উল্লেখ করে আহমেদ কায়কাউস বলেন, আমার চাকরি জীবনের এটিই সর্বশ্রেষ্ঠ মুহূর্ত। মুজিব শতবর্ষ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে একজন পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে জনগণের সেবায় কাজ করার সুযোগ পেয়েছি।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আরো বলেন, আগামী দুই বছরের মধ্যে প্রায় ৯ লাখ ভূমিহীন ও গৃহহীনকে ঘর করে দেয়া হবে। তাদের মধ্যে প্রায় তিন লাখের ঘর-বাড়ি কিছুই নেই। বাকি ৬ লাখের জমি আছে, ঘর নেই। আগামী এক মাসের মধ্যে আরো প্রায় এক লাখ ঘর নির্মাণ সম্পন্ন করে তা বরাদ্দ দেয়া হবে। ৯ লাখ দরিদ্র পরিবার ঘরবাড়ি পেলে দেশে দারিদ্র্য হারও কমবে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া জানান, প্রতিটি ঘরে দুটি বেডরুম, একটি বাথরুম, একটি রান্নাঘর ও একটি বারান্দা রয়েছে। প্রতিটি ঘর নির্মাণে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা খরচ হলেও জমির দাম হিসাব করলে এর দাম প্রায় ১০ লাখ টাকা। গৃহহীনদের আবাসনের ব্যবস্থা করার মধ্য দিয়ে এসডিজি অর্জনও সহজ হবে বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন নোয়াখালী জেলার (বর্তমানে লক্ষ্মীপুর) চরপোড়াগাছা গ্রাম পরিদর্শন করে ভূমিহীন, গৃহহীন অসহায় মানুষের পুনর্বাসনের নির্দেশ দেন। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর আশ্রয়ণ প্রকল্প গ্রহণ করে ১৯৯৭ সাল থেকে ২০২০ পর্যন্ত ৩ লাখ ২০ হাজার ৫২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করেছে।
স্বাআলো/এসএ