এনজিও/সমবায় সমিতির নামে ফটকাবাজী ব্যবসা

বিষয়টি উদ্বেগজনক বটে। বিভিন্ন স্থানে এনজিও/সমবায় সমিতির নামে ফটকাবাজির ব্যবসা শুরু হয়েছে। ফটকাবাজরা সাধারণ মানুষকে নানা রকম প্রলোভনে ভুলিয়ে লাখ লাখ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গা ঢাকা দিচ্ছে। এ দিকে এসব নিরীহ মানুষের হা-হুতাশ করা ছাড়া কিছুই থাকছে না। বিষয়টি এমনই যে এ ধরনের ঘটনা এক জায়গায় একটি হলে পর পরই অন্য জায়গায় ঘটছে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে একটির সাথে যেন আর একটির পূর্ণমাত্রায় যোগসূত্র রয়েছে।

সাতক্ষীরা শহরে মার্চেন্ট কো-অপারেটিভ সোসাইটি নামে একটি সংস্থা ৭০০ গ্রাহকের ১১ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। গণমাধ্যমে এ খবরটি প্রকাশ হয়েছে। সংবাদ সম্মেলন করে গ্রাহকদের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। আর এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সমিতির কর্মকর্তারা সন্ত্রাসী দিয়ে হয়রাণী করছে। এমন ধরণের ঘটনা এর এগ খুলনার পাইকগাছায় ঘটে। র‌্যাক নামে এক এনজিও ব্যবস্থাপক ৮০০ শতাধিক সদস্যের কাছ থেকে ২ কোটি টাকা তুলে পালায়। পরে অবশ্য পুলিশ তাকে ধরে ফেলেছে।

দারিদ্র্য পীড়িত মানুষ যখন আয়-উপার্জনের কোনো আশার বাণী শোনে তখন স্বাভাবিক কারণে তারা যেন বাঁচার পথ পায়। এ কারণে এনজিও অথবা এ ধরনের কোনো সংস্থা যখন অফিস হাকিয়ে দৃষ্টি নন্দন আনাগোনা শুরু করে তখন সহজ সরল প্রাণ মানুষ তাদের প্রতি ঝোঁকে। আর এই সুযোগে তারা বাগিয়ে নেয় তাদের রক্ত নিংড়ানো টাকা-পয়সা। এ ভাবে তাদের পকেট ভরলে একদিন লাপাত্তা হয়। এ ভাবে কত মানুষ যে পথে বসছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। এর আগে মানুষ দেখেছে ডেসটিনি ও এহসান এস বাংলাদেশ নামে দুটি সাড়া জাগানো কোম্পানি বা এনজিওর ফটকাবাজি কারবার। ডেসটিনি দেশের কত সম্ভানাময় তরুণের যে মাথা বিগড়ে তাদের সর্বনাশ করেছে তা হিসাবের বাইরে। আকাশচুম্বী স্বপ্নের জালে তাদেরকে আটকিয়ে তাদের ভাবষ্যৎ ঝরঝরে করে দিয়েছে। তারা এর পেছনে ছুটে একদিকে চাকরির বয়স হারিয়েছে অন্য দিকে হারিয়েছে অভিভাবকের টাকা-পয়সা। এহসান এস বাংলাদেশ পবিত্র ইসলাম ধর্মকে ভাঙিয়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের পকেট কেটেছে।

আরো পড়ুন>>>মানবতার সেবকের একি কাজ!

দেশ নিশ্চয় আইনের গন্ডিতে আবদ্ধ। কোনো কিছুই আইনের বাইরে চলতে পারে না। যে ফটকাবাজি সংস্থার কথা আজ মিডিয়ায় আসছে সেগুলো আইনের বাইরের কোনো সংস্থা নয়। কিন্তু তাদের ব্যাপারে সেই আইন কেন প্রয়োগ হচ্ছে না কেন এটা সবার প্রশ্ন। যার যখন যা মনে হবে, তার ইচ্ছা অনুযায়ী তাই করবে তা হতে পারে না। হতে পারে না একটি তথাকথিত সংস্থা দাঁড় করিয়ে এ ভাবে মানুষকে ঠকিয়ে পথের মানুষে পরিণত করা। দেশের যেখানে সেখানে এই ব্যবসা ফেদে এক শ্রেণির ফটকাবাজ, সাধারণ মানুষের অর্থ লুটে নিচ্ছে আর সরকারের সংশ্লিষ্ট সেবামূলক সংস্থা নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে। তারা কি এই ফটকাবাজিদের পৃষ্ঠপোষক?

আমরা মনে করি এনজিও সংস্থাগুলোর প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখা সরকারের কর্তব্য। যতদূর জানা যায় এ সব সংস্থা সমাজ সেবা ও সমবায় বিভাগ কর্তৃক নিবন্ধিত। পরিদর্শণ ও অডিটের দায়িত্ব এ দুটি বিভাগেরই। কিন্তু তারা দায়িত্ব কতটুকু পালন করছে তাও খতিয়ে দেখতে হবে।

স্বাআলো/আরবিএ