
ডেস্ক রিপোর্ট: মহান ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর মুসলিম উম্মাহর বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা আগামীকাল বুধবার। ‘ঈদুজ্জোহার চাঁদ হাসে ঐ এল আবার দুসরা ঈদ! কোরবানী দে, কোরবানী দে, শোন খোদার ফরমান তাগিদ…’—কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই কাব্যসুর আকাশ-বাতাস মন্দ্রিত করে মনপ্রাণ উজালা করে তুলছে ঈদের আনন্দ রোশনাইয়ে। আল্লাহ তায়ালার প্রতি অপার আনুগত্য এবং তারই রাহে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের এক ঐতিহাসিক ঘটনার স্মরণে মুসলিম বিশ্বে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়ে আসছে।
মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর আত্মত্যাগ ও অনুপম আদর্শের প্রতীকী নিদর্শন হিসেবে কোরবানির রেওয়াজ। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নির্দেশে হযরত ইব্রাহিম (আ.) তার প্রাণপ্রিয় পুত্র হযরত ইসমাইলকে (আ.) কোরবানি করতে উদ্যত হয়েছিলেন। এই অনন্য ঘটনার স্মরণে কোরবানি প্রচলিত হয়। ইসলামের পরিভাষায় কোরবানি হলো- নির্দিষ্ট পশুকে একমাত্র আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময়ে তারই নামে জবেহ করা। মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে জবাই করা পশুর মাংস বা রক্ত কিছুই পৌঁছায় না, কেবল নিয়ত ছাড়া। ঈদুল আজহার অন্যতম শিক্ষা হচ্ছে, মনের পশু অর্থাত্ কুপ্রবৃত্তিকে পরিত্যাগ করা।’ মনের পশুরে কর জবাই পশুরাও বাঁচে, বাঁচে সবাই…’।
গরু, মহিষ, উট, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা এ শ্রেণির প্রাণী দ্বারা কোরবানি করা যায়। কোরবানিকৃত পশুর তিন ভাগের এক ভাগ গরিব-মিসকিন, এক ভাগ আত্মীয়স্বজনের মধ্যে বিলিয়ে দিতে হয়। আবার পুরোটাই বিলিয়ে দেয়া যায়। এদিকে ৯ জ্বিলহজ্জ ফজর নামাজের পর থেকে ১৩ জ্বিলহজ্জ আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর তাকবিরে তালবিয়া পাঠ করা ওয়াজিব। তালবিয়াহ হলো, ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদ।’
করোনা মহামারির কারণে দেশে উত্সবমুখর পরিবেশ ফিকে হয়ে উঠেছে। লকডাউন এবং বিধি-নিষেধের কারণে অনেকে এবার গ্রামের বাড়িতে যাননি। ঈদকে সামনে রেখে জাতীয় দৈনিকগুলো বিশেষ আয়োজনে বের হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার, সব কটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও এফএম রেডিও ঈদ উপলক্ষ্যে কয়েক দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করছে। দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বছর করোনার কারণে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে না। বায়তুল মোকাররম মসজিদে সকাল ৭টা থেকে পাঁচটি জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ময়দানে জামায়াত করা যাবে।
স্বাআলো/এস
.
