ন্যায়বিচার চেয়ে ফেসবুকে পুলিশের হ্যাশট্যাগ

ঢাকা অফিস: ‘জাস্টিস ফর মহুয়া। জাস্টিস ফর ফাদার।’ ফেসবুকে ন্যায়বিচার চেয়ে এমন হ্যাশট্যাগ দিয়ে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের পুলিশ সদস্যরা। পোস্টের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে মহুয়া হাজং ও তার বাবার একটি ছবি। তাদের কেউ মহুয়ার সহকর্মী, কেউ সমব্যথী। মহুয়ার জন্য ন্যায়বিচার চাওয়া পোস্টের মন্তব্যে অনেক সাধারণ মানুষকেও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত সনেট শিকদার নামের একজন পুলিশ সার্জেন্ট তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ন্যায়ের পক্ষে কথা বলার শক্তিটুকু আগেও ছিলো, ভবিষ্যতেও থাকবে ইনশাআল্লাহ। আমি আমার অবস্থানটা পরিষ্কার করলাম।

১৫ ডিসেম্বর দেয়া তার এই স্ট্যাটাস অনেকেই শেয়ার ও মন্তব্য করেছে। জুয়েল মাহমুদ নামের এক কনস্টেবল মন্তব্য করেছেন, আমরা নিজেরাই নিজেদের কাছে খুব অসহায়।

মহুয়া ও তার বাবার একটি ছবি পোস্ট করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন পান্না আক্তার নামে ডিএমপির অন্য এক সার্জেন্ট। ছবিটিতে হ্যাশট্যাগ দিয়ে লেখা হয়েছে, স্টে উইথ মহুয়া। আমি ও আমরা ন্যায়বিচারপ্রত্যাশী।

এই স্ট্যাটাসে সিদ্দিক নামের একজন পুলিশ সদস্য লিখেছেন, এর বিচার চাই। অবিলম্বে তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে।

রাজধানীর বনানীতে প্রাইভেট কারের চাপায় পা হারানো সার্জেন্ট মহুয়ার বাবা মনোরঞ্জন হাজংয়ের ওপরই দুর্ঘটনার দায় চাপিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন সেই বিচারপতির ছেলে। গত মঙ্গলবার বনানী থানায় জিডিটি করেন তিনি।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বনানী থানার ওসি নূরে আজম মিয়া। জিডি তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন বনানী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আলমগীর গাজী। তিনি এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সার্জেন্ট মহুয়ার মামলারও তদন্ত কর্মকর্তা।

মামলা তদন্তে অগ্রগতির বিষয়ে বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলমগীর গাজী বলেন, মামলার তদন্তে এখনো তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। আসামিও গ্রেফতার করা যায়নি। তবে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

জিডিতে গাড়ির মালিক সাঈদ হাসান বলেছেন, তার গাড়িটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়নি। বরং বেআইনিভাবে উল্টো দিক থেকে মনোরঞ্জনই তার গাড়িতে লাগিয়ে দেন। এতে তিনি ও তার স্ত্রীর প্রাণহানির মতো অবস্থা তৈরি হয়েছিলো। তাই উল্টো পথে মোটরসাইকেল চালানোর জন্য এই দুর্ঘটনার পুরো দায়দায়িত্ব মনোরঞ্জনের ওপরই বর্তায়।

এদিকে রাজধানীর বারডেম জেনারেল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধাীন মনোরঞ্জন হাজংয়ের শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হয়েছে। এরই মধ্যে তিনি স্ট্রোক করেছেন জানিয়ে চিকিত্সকদের বরাত দিয়ে মামলার বাদী ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সেন্ট্রাল কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারে কর্মরত সার্জেন্ট মহুয়া বলেন, বাবার অবস্থা সংকটাপন্ন। বাবা ডায়াবেটিসের রোগী। তার ওপর গাড়ি চাপা দেয়ার কারণে এরই মধ্যে বাবার এক পা কেটে ফেলতে হয়েছে। আরেক পায়ের অবস্থাও ভালো নয়।

গত ২ ডিসেম্বর রাত ২টার দিকে রাজধানীর বনানীর চেয়ারম্যানবাড়ী সড়কে মনোরঞ্জন হাজংকে মোটরসাইকেলসহ চাপা দেয় একটি লাল রঙের প্রাইভেট কার। মারাত্মক আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে কেটে ফেলতে হয় একটি পা।

স্বাআলো/এসএ