
কেশবপুরের নতুন মূলগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মচারী নিয়োগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লাখ লাখ টাকা অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মোটা অংকের টাকা দিতে না পারায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, জমিদাতা পরিবারের প্রার্থীসহ অনেকেই নিয়োগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
এ ব্যাপারে স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিতে গত ৩১ মে এলাকাবাসীর পক্ষে মানিক কর্মকার নামের এক ব্যক্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযোগটির তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্যে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা গেছে, নতুন মূলগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন করে অফিস সহায়ক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও আয়া পদে নিয়োগে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরপর থেকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কয়েক মাস ধরে মৌখিকভাবে একজন জনপ্রতিনিধি ও বিদ্যালয়ের সভাপতির নাম ভাঙিয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিবার প্রধানদের সাথে অনৈতিক লেনদেন করে বেড়াচ্ছিলেন। অবশেষে মোটা অংকের টাকায় ৩০ এপ্রিল নিয়োগ বোর্ড বসিয়ে অফিস সহায়ক পদে আল আমিন, পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে কামরুজ্জামান ও আয়া পদে নার্গিস পারভীনকে নিয়োগ দেয়া হয়।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বহিষ্কার ২৪, আটক ২
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, কামরুজ্জামানের বয়স ৪০ থেকে ৪২ বছর। তিনি প্রাইমারী পাশ করেননি। থাকতেন বিদেশে। দেশে ফিরে মোটা অংকের টাকায় ৮ম শ্রেণি পাশের সার্টিফিকেট কিনে জমা দিয়েছেন। অপর ২ প্রার্থী টাকার দৌঁড়ে এগিয়ে থেকে নিয়োগ পেয়েছেন।
মূলগ্রামের ইন্দ্রোজিৎ কর্মকার অভিযোগ করে বলেন, তার ছেলে নয়ন একজন শিক্ষিত ও যোগ্য প্রার্থী। প্রধান শিক্ষক তার কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। তিনি কেশবপুরের বিভিন্ন নেতা ধরে তাকে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা দিতে রাজি হয়েছিলেন। টাকার অংক কম বলে তার ছেলেকে নিয়োগ দেয়া হয়নি।
সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কামাল হোসেনের ছেলে জাহিদ হোসান জয় বলেন, তার ছোট ভাই ওই বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক পদে আবেদন করেছিলো। প্রধান শিক্ষকের দাবিকৃত টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় নিয়োগ থেকে বঞ্চিত হয়। তিনি স্কুলের ৩ পদের নিয়োগে প্রায় অর্ধকোটি টাকার অর্থ বাণিজ্য করেছেন। এনিয়ে এলাকায় তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করছে। তিনি দ্রুত এ নিয়োগ বাতিল করে স্বচ্ছ নিয়োগ দেয়ার পাশাপাশি তদন্ত করে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
বিদ্যালয়ের সভাপতি আফাসার আলী গাজী জানিয়েছেন, তিনি শুধু নিয়োগ বোর্ডে ছিলেন। আবেদন গ্রহণ, বাছাইসহ যাবতীয় কাজ প্রধান শিক্ষক নিজেই করেছেন। তিনি টাকা লেনদেনের সাথে জড়িত ছিলেন না। আবেদন করেও তার মেয়ের চাকরি হয়নি। তিনি স্কুলের ভালোর জন্যে স্বচ্ছ নিয়োগের পক্ষে ছিলেন।
প্রধান শিক্ষক অজিত মুখার্জি জানিয়েছেন, এলাকা থেকে নানা অভিযোগ তার বিরুদ্ধে করতেই পারে। তিনি স্বচ্ছভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। ১০ থেকে ১৪ লাখ টাকা আদায়ের অভিযোগ সঠিক নয়। অনেকে চাকরি না পেয়ে ভুল কথা বলছে।
স্বাআলো/এস
.

আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ, কেশবপুর (যশোর)
