ঘুষের ভিডিও ভাইরাল, সেই ভূমি কর্মকর্তা বরখাস্ত

প্রকাশ্যে ঘুষ নিচ্ছেন রাজশাহীর চারঘাটের সরদহ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার আবদুস সাত্তার। সম্প্রতি এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

বিষয়টি নজরে আসলে এক অফিস আদেশে সেই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল।

রবিবার (২৭ নভেম্বর) এ আদেশ কার্যকর হয়। এর আগে শনিবার (২৬ নভেম্বর) রাতে তাকে সেই আদেশ পৌঁছে দেয়া হয়।

সাময়িক বরখাস্তের ওই আদেশে বলা হয়েছে, প্রকাশিত সেসব ভিডিও পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের ক্ষেত্রে দাখিলায় উল্লিখিত টাকার চেয়ে অধিক টাকা অনৈতিকভাবে সেবা প্রার্থীদের কাছে দাবি করেছেন আব্দুস সাত্তার।

সরকার যেখানে ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত ভূমিসেবা দিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সেখানে তিনি জোর করে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অপচেষ্টায় লিপ্ত।

এটি সরকারি কর্মচারী বিধিমালানুযায়ী অসদাচরণ ও দুর্নীতি পরায়ণতার শামিল। এতে জেলা প্রশাসনের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে।

অফিস আদেশে আরো বলা হয়েছে, তিনি চাকরিতে বহাল থাকলে এ সংক্রান্ত নিরপেক্ষ তদন্ত ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে প্রভাব খাটানোর আশঙ্কা রয়েছে। তাকে কর্মে নিয়োজিত রাখলে ভূমি প্রশাসনের সুনাম নষ্ট হওয়া ও সরকারি স্বার্থ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এছাড়া ভূমি প্রশাসনের অন্যান্য কর্মচারীদের মধ্যেও এরূপ কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। সেজন্য তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। তবে বরখাস্তকালীন তিনি প্রচলিত বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা পাবেন।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তারের ঘুষ লেনদেনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

ভিডিওতে দেখা যায়, কার্যালয়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে ঘুষের টাকা নিয়ে দরকষাকষি করছেন তিনি। এক পর্যায়ে টাকা গুনে পকেটে ঢোকান। টেবিলের সামনে টাকা হাতে নিয়ে বসে থাকা সেবাগ্রহিতাকে তিনি বলছেন, ৯০০ টাকা দিলে হবে। না না হবে না, এভাবে। আশ্চর্য তো! গরিব মানুষও দিছে। আর আপনি তো মার্চেন্ট মানুষ। ৯০০ টাকা গুনে দিছেন, এটা কেমন কথা হলো?

তার টেবিলের সামনে বসে থাকা অপর সেবাগ্রহিতাকে চার হাজারের সঙ্গে আরো ৫০০ টাকা দিতে বলেন। না হলে তিনি খাজনার চেক কাটবেন না বলে জানিয়ে দেন।

আরেক সেবাগ্রহিতাকে অফিসের বাইরে নিয়ে গিয়ে একটি গাছতলায় দাঁড়িয়ে কথা বলেন আব্দুস সাত্তার। এর ফাঁকে কয়েক দফায় তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে পকেটে রাখেন।

প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেনের এসব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর রাজশাহী জেলা প্রশাসনের নজরে আসে।

স্বাআলো/এস

.

Author
রাজশাহী ব্যুরো