
কালীগঞ্জে সুদে ব্যবসার বিষয়টি আবারো গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে। এবার মাসিক ৫ হাজার টাকা লভ্যাংশের চুক্তিতে ৮০ হাজার টাকা ধার নিয়ে লতিফুল আলম ওরফে শহিদুল ৬ বছরে ৩ লাখ ৪৮ হাজার টাকা পরিশোধ করলেও ধার থেকে মুক্তি মেলেনি তার। এখন আরো ৮ লাখ টাকা দাবি করছে পাওনাদার। এমন পরিস্থিতিতে নিরুপায় ফয়লা গ্রামের শহিদুল ওই ধারের জাল থেকে মুক্তির জন্য রাজনৈতিক ও সমাজপতিদের কাছে বিচার চেয়ে বেড়াচ্ছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেও শেষ অবধি তা আলোর মুখ দেখেনি।
কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অধিদফরের কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম জানান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া সুদভিত্তিক অর্থ লেনদেন অবৈধ। সেটা ব্যক্তি অথবা সংগঠন যাই হোক। তবে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কেউ যদি হেনস্থা বা প্রতারণার শিকার হয় তাহলে আবেদন করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার নিয়ম রয়েছে।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় এই অবৈধ সুদে ব্যবসাটি খোলামেলাভাবেই চলছে। সেখানকার সুদে কারবারীর পাল্লায় পড়ে মানুষ সর্বস্বান্ত হচ্ছে। তাদের কাছ থেকে কেউ লোন নিলে ওই জাল থেকে আর গ্রহীতারা বের হতে পারে না। কিন্তু দেখার বা বলার কেউ নেই। তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে এমনই যাতাকলে নিষ্পিষ্ট হচ্ছে সেখানকার মানুষ।
ফটকাবাজির কথা বহু রকম শোনা যায়। কিন্তু এমন ধরনের ফটকাবাজির কথা সচরাচর শোনা য্য়া না। ব্যাংক এবং এনজিওগুলো যে ঋণ বিতরণ করে তার সুদের হার সীমিত। যতদূর জানা যায়, শতকরা ১০-১৫ টাকার বেশি নয়। এই সুদের টাকা গুনতে গিয়ে তাই অনেকে গলদঘর্ম হয়ে ওঠেন। আর উচ্চ হার সুদের টাকা পরিশোধ করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়। এই ফাঁদে একবার যে পা দেবে তাকে আর মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়াতে হবে না। কালীগঞ্জ এলাকায় হচ্ছেও তাই। অবৈধ টাকার জোরে এ সুদে কারবারীরা রাতকে দিন আর দিনকে রাত করতে পারে। তাদের আছে পোষা সন্ত্রাসী বাহিনীও । যাদের ব্যবহার করা হয় টাকা আদায়সহ নানা কাজে।
আমরা যতদূর জানি ব্যাংকের মাধ্যমে সহজ ঋণের ব্যবস্থা আছে। ঋণ সুবিধা হাতের কাছে পৌঁছে দেবার জন্য এনজিওগুলো কাজ করছে। এরপরও কেন মানুষ জেনেশুনে সুদে কারবারীদেও পাতা ফাঁদে পা দিচ্ছে। খবর নিয়ে জানা যায় তাদের কাছ থেকে টাকা নিতে কাগজপত্রের কোনো ঝামেলা নেই। চাইলেই পাওয়া যায়। এ সুবিধার জন্য মানুষ ওদিকে ভেড়ে। এতে শেষমেষ তাদেরকে সর্বস্বান্ত হতে হচ্ছে।
এসব সুদে ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যবস্থা নেয়া বা ব্যবস্থা থাকা উচিত। ফ্রি স্টাইলে এভাবে মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে ধ্বংস করার এ সর্বনাশা কাজ চলতে দেয়া যায় না।
স্বাআলো/এসএস
.
