ভারী শ্রমের ফলে শিশুদের বেড়ে ওঠা বাধাপ্রাপ্ত হয়

দেশে এখনো শিশুশ্রমে নিয়োজিত আছে ১৭ লাখ শিশু। এর মধ্যে ১২ লাখ শিশু অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত। জাতীয় সংসদে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান বলেছেন, নির্ধারিত সময়ের পর ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও শিশুশ্রম নির্মূল করা যায়নি।

বিবিএস-এর জরিপ বলছে, দেশে ১৮টি খাতে কাজকর্মে নিয়োজিত ১৬ লাখ ৯৮ হাজার শিশু। আর এই শিশুশ্রমে নেমে পড়ার মূল কারণ দারিদ্র্য। যে সময় আনন্দ-উল্লাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে থাকার কথা তখন শিশু শ্রমিকরা থাকে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে। শিক্ষাবঞ্চিত এসব শিশু দিন-রাত পরিশ্রম করে। তাদের স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠা বাধাপ্রাপ্ত হয়।

শিশুশ্রম নির্মূল করার কথা ছিলো ২০১৬ সালের মধ্যে। ২০১০ সালের প্রণীত জাতীয় শিশুশ্রম নির্মূল নীতিমালায় এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। বাস্তবতা হচ্ছে, এখনো শিশুশ্রম আছে। এটা হতাশাজনক। তবে অতীত পরিসংখ্যান থেকে আশাবাদী হওয়ার মতো কিছু চিত্র মেলে। ২০০৩ সালে দেশে শিশু শ্রমিক ছিলো ৩৪ লাখ। সেই তুলনায় শিশু শ্রমিকের সংখ্যা অনেক কমেছে। তবে করোনা মহামারীতে শিশুশ্রম আবার বেড়েছে। সাধারণত নিম্নবিত্ত পরিবারেরর শিশু ও পথশিশুরাই শিশুশ্রমে নিয়োজিত হয়। কিন্তু কোভিড-১৯-এর কারণে মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেকে শিশুশ্রমে নিযুক্ত হয়েছে।

শিশুশ্রম নির্মূল হোক সেটাই আমাদের চাওয়া। কোনো প্রতিষ্ঠান যাতে শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত করতে না পারে তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ থেকে ফিরিয়ে এনে আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানোর ব্যবস্থা করা জরুরি।

কিছু পরিবার আছে যাদের শিশুরা কাজ না করলে সংসার চলবে না। এ ধরনের পরিবারের জন্য মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করা যায় কিনা সেটা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করতে হবে। কোভিড-১৯-এ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের উপার্জনের উদ্যোগ নিতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন. শিশুশ্রম নির্মূলের জন্য সর্বপ্রথম দারিদ্র্য হ্রাস করতে হবে।

সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলোকে শিশুর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ধারণা দেয়ার জন্য সরকারি-বেসরকারিভাবে উদ্যোগ নিতে হবে। আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া গেলে সব শিশুই একদিন আপন প্রতিভায় সমুজ্জ্বল হবে।

স্বাআলো/এস