৫০ হাজার বছর পর সবুজ ধূমকেতু পৃথিবীর আকাশে, দেখা যাবে আজ রাতে

৫০ হাজার বছর পর পৃথিবীর কাছাকাছি আসছে সবুজ ধূমকেতু (Green Comet)। কিছুদিন আগেই তাকে আবিষ্কার করেছিলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা (Astronemers)। জানা গিয়েছে, সি২/২০২২ ই৩ (C2/2022 E3) নামধারী এই ধূমকেতু।

ধূমকেতু দেখতে চাইলে সেরা সময় আজ বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত। শহুরে বাতি থেকে দূরে, তুলনামূলক আঁধার কোনো এলাকায় গিয়ে দেখার চেষ্টা করতে পারেন। এ জন্য আকাশ পরিষ্কার থাকা জরুরি। সবচেয়ে ভালো হয় দূরবীনে চোখ রাখলে।

গত বছরের (২০২২) ২ মার্চ বিরল এ ধুমকেতুর আবিষ্কার করেছিলেন আমেরিকার জিকি ট্রানসিয়েন্ট ফেসিলিটির (জেডটিএফ) জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তারা এর নাম দেন সি২/২০২২ ই৩।

এই ধুমকেতু সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘোরে এবং একবার পূর্ণ প্রদক্ষিণ করতে এর সময় লাগে ৫০ হাজার বছর। নিজের কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে পৃথিবীর পাশ দিয়ে অতিক্রম করতে চলেছে।

উল্টো দিকে ঘুরছে পৃথিবীর কেন্দ্র! জীবকূল কি ধ্বংস হয়ে যেতে পারে?

গত ১২ জানুয়ারি এই ধূমকেতু সূর্যের সব থেকে কাছাকাছি ছিলো। এখন সরে আসছে পৃথিবীর দিকে। বৃহস্পতিবারই (২ ফেব্রুয়ারি) এটি পৃথিবীর সব থেকে কাছাকাছি আসবে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এর আগে এই ধুমকেতু শেষবার যখন পৃথিবীর এত কাছে এসেছিলো তখন পৃথিবীতে নিয়ানডার্থাল মানুষ বসবাস করত।

জেডটিএফ-এর দুই প্রিন্সিপাল বিজ্ঞানী হলেন টম প্রিন্স ও ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ডের মাইকেল কেলি। কেলি বলেন, ধূমকেতুর কক্ষপথ দেখে বোঝা যাচ্ছে, এটি আমাদের সৌরজগতের শেষ কোণে থাকা উর্ট ক্লাউড থেকে এসেছে। এই উর্ট ক্লাউড হলো প্লুটো গ্রহেরও পিছনে অবস্থিত কোটি কোটি ধূমকেতু ও গ্রহাণুর আবাসস্থল।

এই উর্ট ক্লাউডকে সৌরজগতের দূরতম অঞ্চল ও ধূমকেতুদের বাড়ি বলে আখ্যা দিয়েছে নাসা। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন মতে, সবুজ ধূমকেতুটি এখন পৃথিবী থেকে ২.৫ আলোক-মিনিট দূরে আছে, যার অর্থ ২.৭ কোটি মাইল দূরে।

নাসা জানিয়েছে, টেলিস্কোপ ও দূরবীনে সবুজ ধূমকেতুকে দেখা তো যাবেই, রাতের আকাশ পরিষ্কার থাকলে খালি চোখেও দেখা যাবে। কমেটটি সবুজ রঙের ও ঝাঁটার মতো লেজে সাদা আলো দেখা যাবে।

উত্তর গোলার্ধের মানুষ একে জানুয়ারি মাসের শেষে ভোরবেলা দেখতে পেয়েছেন। দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে দেখা যাবে রাতের আকাশে ও ফেব্রুয়ারি মাসে। এশিয়ার দেশগুলো থেকে যারা দেখবেন তাদের উত্তর-পশ্চিম আকাশের দিকে তাকাতে হবে।

দিগন্তরেখার সঙ্গে ১৬ ডিগ্রি কোণ করে অবস্থান করবে সবুজ ধূমকেতু। তবে বাড়িঘরের আলো ও রাস্তার আলোর দাপটে একে খালি চোখে দেখা মুশকিল হবে। এবার পৃথিবী অতিক্রম করে গভীর মহাকাশে ফিরে যাওয়ার পর বর্তমান পৃথিবীতে বসবাসকারী কোনো ব্যক্তি ধূমকেতুটিকে আর দেখতে পাবে না।

স্বাআলো/এসএস

.

Author
আন্তর্জাতিক ডেস্ক