
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন সংলগ্ন শরণখোলা ও মোড়েলগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি গ্রামে লোকালয়ে বাঘ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। লোকালয়ে এসে মানুষ ও গবাদিপশুর ওপর আক্রমন থেকে শুরু করে বন বিভাগের টহল ফাঁড়িতে দল বেধে রয়েলবেঙ্গল টাইগার ঘুরতে দেখার খবর ছড়িয়ে পড়ায় এ আতঙ্ক আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। সুন্দরবনের পাহারাদার হিসাবে খ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগারদের এখন প্রজনন মৌসুম চলছে বলে তারা এলোমেলোভাবে ছড়িয়ে পড়ছে বলে বন বিভাগ ধারণা করছে। এ অবস্থায় সব থেকে আতঙ্ক বিরাজ করছে সুন্দরবন সংলগ্ন অন্তত ১০টি গ্রামের বাসিন্দাদের মাঝে। ফলে এসব গ্রামের লোকেরা রাত জেগে পাহারা দেয়া শুরু করেছে।
পূর্ব সুন্দরবনের সুপতি স্টেশনের চান্দেশ্বর ফরেস্ট অফিস এলাকায় গত শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) খুব কাছে চলে আসে একে একে তিনটি বাঘ। প্রায় ২৪ ঘন্টা বাঘ তিনটি ওইখানে অবস্থান করে ফিরে যায় বনে। এ সময় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে ওই টহল ফাঁড়ির বনরক্ষিরাও। এর আগে গত (২৭ জানুয়ারি) জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন আমুরবুনিয়া এলাকায় বাঘের আক্রমণের শিকার হয়ে গুরুত্বর আহত হন অনুকুল গাইন নামের এক জেলে। এর পর থেকে সুন্দরবনের চাঁদপাই ও শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধিন জেলার মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা ও মোংলা উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন ১০ গ্রামে দেখা দেয় বাঘ আতঙ্ক। এসব গ্রামে খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে এসে গবাদিপশুর উপর বাঘের আক্রমনের ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। এমন অবস্থায় বাঘের পায়ের ছাপ ও গর্জনে আতঙ্কে থাকা গ্রামবাসিদের সতর্ক ও বাঘ রক্ষায় বন বিভাগের পক্ষ থেকে করা হচ্ছে মাইকিং। সেই সাথে স্থানীয়দের সাথে নিয়ে রাত জেগে দেয়া হচ্ছে পাহারা। স্থানীয়দের অভিযোগ বন সংলগ্ন মরাভোলা নদী শুকিয়ে যাওয়ায় সহজে লোকালয়ে প্রবেশ করছে বাঘ।
বাগেরহাট পূর্ব-সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন সাংবাদিকদের জানান, সুন্দরবনে এখন বাঘের প্রজননকাল। তাই সঙ্গীসহ বাঘগুলো জোড়ায় জোড়ায় ঘুরে বেড়ায়। চান্দেশ্বর ফরেস্ট টহল ফাঁড়ির কর্মকর্তাসহ ৫ বনরক্ষী ৩টি বাঘ দেখতে পেলেও ওখানে দুই জোড়া অর্থাৎ ৪টি বাঘ রয়েছে। ওই দুইজোড়া বাঘকে কোন রকম উত্তাক্ত না করাসহ তাদের চলাফেরায় বাধা না দিতে কর্মকর্তাসহ বনরক্ষীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বন অফিসে অবরুদ্ধ হয়ে পড়া কর্মকর্তাসহ বনরক্ষীদের খাবার পাশের অফিস থেকে ৮ জন বনরক্ষীদের দিয়ে ২৪ ঘন্টা পর পৌঁছে দেয়া হয়েছে। আর ভোলা নদী শুকিয়ে যাওয়ায় অনেক সময় সুন্দরবন থেকে বাঘা লোকালয়ে চলে আসছে।
স্বাআলো/এসএস
.

আজাদুল হক, বাগেরহাট
