ভুয়া সার উৎপাদনকারীরা জাতির শত্রু

এখন বোরো আবাদের পূূর্ণ মৌসুম। এ সময়টাতে কৃষকদের যখন ফসলের ক্ষেতে ব্যস্ত সময় কাটানোর কথা সেই সময় গ্রাম-গ্রমান্তর জুড়ে চলছে তাদের হাহাকার। কেউ বলছেন ক্ষেত্রে ড্যাপ নামে যে সারটি ব্যবহার করা হচ্ছে সেটি দেখা যাচ্ছে পাথরকুচি, ইটের গুড়া, সিলেট স্যান্ড (সিলেকশন বালি), ও চুন দিয়ে ওই সব সার সদৃশ দ্রব্য বানিয়ে প্যাকেটজাত করে বাজারে বিক্রি করছে।

ইউরিয়া ব্যবহার করে সুফল পাচ্ছেন না কেউই। এমনইভাবে সব রাসায়নিক সার নিয়ে তাদের নানা অভিযোগ। এসব কথা গণমাধ্যমের পাতা ভরে প্রকাশ হলেও তার কোনো প্রতিকার নেই।

বেশি ফলন পাবার আশায় ক্ষেতের ফসল ভালো করার জন্য রাসায়নিক সার ব্যবহার করে কৃষকরা সুফল পাচ্ছেন না। বরং ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। এ নিয়ে তাদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। কিন্তু বুঝতে পারছেন না কোথা থেকে কী হয়ে যাচ্ছে।

ফসলের জন্য সর্বোত্তম হচ্ছে জৈব সার। এর ঘাটতির জন্য ব্যবহার করা হয় রাসায়নিক সার। এর মধ্যে ইউরিয়া, টিএসপি (ট্রিপল সুপার ফসফেট) ও পটাশ (মিউরেট অব পটাশ) ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এই তিনটি সারের সহযোগী হিসেবে উদ্ভাবন হয়েছে সুফলা হেপ্টা জিংক, মনোজিংক, জিংক গোল্ড, জিংক প্লাস। কিন্তু এগুলোর আসলটা বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না।

যাদের দেখার দায়িত্ব তারা কোথায় থাকেন। সরিষায় ভুত থাকলে ভুত তাড়াবে কে। যারা ঠেকাবে অর্থাৎ বেড়ায় যদি ক্ষেত খায় তাহলে ফসল রক্ষা হবে কি করে। এমন হাজারো প্রশ্ন সঙ্গত কারণেই সামনে না এসে পারে না।

কৃষক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল ফলায়, সেই ফসলে জাতির ক্ষুধার অন্ন হয়। তা খেয়ে মানুষ বেঁচে থাকে। সেই অন্ন উৎপাদনকে যারা ক্ষতির মুখে ঠেলে দিচ্ছে এবং সরকারি বেতনের টাকা খেয়ে যারা তাদেরকে সহযোগিতা করছে উভয়ের কঠোর শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়াকে যারা ক্ষতিগ্রস্ত করে তারা নিঃসন্দেহে দেশ ও জাতির শত্রু। তাদের ক্ষমা করার অর্থ হলো নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারা। বিষয়টিকে ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হোক।

স্বাআলো/এস

.