
প্রযুক্তি শিক্ষায় এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রীরা যখন ঈর্ষণীয় সাফল্য বয়ে আনছে, ঠিক তখনই একেবারেই ভিন্ন চিত্র চাঁপাইনবাবগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে। ছাত্রী কোটায় ছাত্র ভর্তির অভিযোগ উঠেছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
অব্যবস্থাপনা, আবাসন সমস্যা ও কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই মূলত এখানে ছাত্রীরা ভর্তি হতে অনাগ্রহী বলে অভিযোগ। এর ফলে ছাত্রীদের নির্ধারিত কোটা পূরণ হয় না বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটটি সরকারের স্থাপিত ৪৯টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একটি। বর্তমানে ৬টি প্রযুক্তি বিভাগে শিক্ষার্থীরা এখানে পড়াশোনা করছে। আসন সংখ্যা এক হাজার ২০০। প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী মোট আসনের ২০ শতাংশ সংরক্ষিত ছাত্রীদের জন্য। কিন্তু ছাত্রী না পাওয়ায় আসন পূরণ করা হয় ছাত্রদের দিয়েই।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আবাসন সমস্যাসহ বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার কারণে ছাত্রীরা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয় না। এ ছাড়া শিক্ষকরাও ছাত্রী ভর্তির বিষয়টি সেভাবে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেন না।
ইনস্টিটিউটের কয়েকজন ছাত্রী জানায়, ভর্তির পর থেকেই বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় তাদের। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা, ছাত্রের তুলনায় ছাত্রীর সংখ্যা অনেক কম। শ্রেণিকক্ষ ছাত্রদের উপস্থিতিতে গমগম করলেও ছাত্রী থাকে হাতেগোনা। ফলে ক্লাসে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।
এক শিক্ষার্থী বলেন, একে তো পলিটেকনিকের অবস্থান শহর থেকে বেশ দূরে, তার ওপর আমাদের নিজস্ব কোনো ছাত্রী হোস্টেল নেই। এমনকি আশপাশে ব্যক্তি মালিকানাধীন ছাত্রীনিবাসও নেই। যে কারণে বাড়ি থেকে যাতায়াত করতে অনেক সমস্যা হয়। ক্যাম্পাসে অনেক সময় ইভটিজিংয়ের শিকারও হতে হয় আমাদের।
এক্ষেত্রে শিক্ষকরা কতটা সহায়ক- এমন প্রশ্নের জবাবে ওই শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষকরাও আমাদের গুরুত্ব দেন না। ছাত্রী বাড়াতে শিক্ষকদের কোনো উদ্যোগও দেখি না।
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষিকা আফিদা রহমান বলেন, মেয়েরা এমনিতেই কারিগরি শিক্ষায় আগ্রহী নয়। তারপর বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার অভাব, আবাসিক সুবিধা না থাকা ও ব্যবহারিক ক্লাস বেশি হওয়ায় মেয়েদের আগ্রহ কম।
তবে প্রতিষ্ঠানে কোনো অব্যবস্থাপনা নেই দাবি করে ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রকৌশলী এজেডএম মাসুদুর রহমান জানান, ২০ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকলেও বর্তমানে ছাত্রীর সংখ্যা ৪-৫ শতাংশ। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, শিক্ষার্থীর এই হার অনেক কম।
স্বাআলো/এস
.
