সোনা চোরাচালানের মূলহোতার সন্ধান

সোনা চোরাচালান সম্পর্কে বরাবর যে সন্দেহ করা হয় তাই এবার স্পষ্ট প্রমাণিত হলো। বিষয়টা হচ্ছে সোনা চোরাচালানের অভিযোগে যারা ধরা পড়ছে তারা পেটের দায়ে এ কাজটি করে। মূলহোতারা থাকে আড়ালে।

রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলায় ১০টি সোনার বারসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

আটককৃত সোনার ওজন সাত কেজি ৩০০ গ্রাম। যার বাজার মূল্য প্রায় সাত কোটি টাকা। ১৪ মার্চ দুপুরে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার এমএম শাকিলুজ্জামান এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। ওই সোনার মূল ক্রেতা ইউপি সদস্য ।

রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের পাংশা ও খোকশার বর্ডার এলাকায় দুই মোটরসাইকেল আরোহীকে সন্দেহ হলে তাদের তল্লাশি করে পুলিশ। এ সময় ছোট বড় ১০টি সোনার বার উদ্ধার করা হয়। এদিকে সেসময় গ্রেফতারকৃতদের ফোনে একাধিকবার কল দিচ্ছিলো খোকশা ওসমানপুরের এক ইউপি সদস্য। পরে তাকেও গ্রেফতার করে পুলিশ।

৭ কোটি টাকার সোনা জব্দ, ফোন করে ধরা খেলেন কুষ্টিয়ার মেম্বর

গ্রেফতারকৃত ইউপি সদস্য প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে এই সোনা সে নিতো। ধারণা করা হচ্ছে এসব সোনা দেশের বাইরে পাচারের জন্য নেয়া হচ্ছিলো। গ্রেফতাররা হলো, পাংশার হাজরাপাড়ার সাত্তার শেখ (৩৩), বনগ্রামের নাহিদুল ইসলাম (১৯) ও কুষ্টিয়ার ইউপি সদস্য জহুরুল ইসলাম (৩৮)।

চোরাচালানের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কড়াকড়ি ব্যবস্থাও নিলেও তা থেমে নেই। বিভিন্ন কৌশলে এক শ্রেণির মানুষ এ অবৈধ কাজটি করেই যাচ্ছে। তাদের আচরণ দেখলে মনে হয় তারা সব কঠোরতাকে ড্যামকেয়ার ভাব দেখাচ্ছে। বিজিবি ও পুলিশ বিভাগকে এর বিরুদ্ধে কঠোর ভূকিকা নিতেও দেখা যাচ্ছে, কিন্তু তারপরও কেনো এ অবস্থা তা ভাববার বিষয়। এ দেশে সাধারণত মাদক ও সোনা চোরাচালান হচ্ছে বেশি। বহনকারী বা মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তবু চোরাচালানের স্রোত থামছে না।

সোনা চোরাচালান থেমে নেই এ জন্য বলছি যে, প্রায় শোনা যায় পাচার করার জন্য আনা সোনা ধরা পড়েছে। যারা এর সাথে জড়িত তারা এতোটাই অপ্রতিরোধ্য যে বার বার ধরা পড়লেও তারা থেমে নেই। আমরা মনে করি অহেতুক চুনোপুটির পেছনে দৌড়িয়ে সোনা চোরাচালান দমনের কাঙ্খিত সফলতা পাওয়া যাবে না, যতক্ষণ না এর হোতাদের দমন করা যাবে।

যারা দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে, মানুষের অকল্যাণে সোনা চোরাচালান ব্যবসা করেও সমাজের মধ্যমণি হয়ে হয়ে বসে আছে তাদের কালো হাত আগে ভাঙতে হবে। চোরাচালানীরাতো হিতাহিত জ্ঞান শূন্য মানুষ নামের অদ্ভুত প্রাণি। তারা চোরাচালান করতে গিয়ে ধরা পড়লে তাদের জীবন শেষ এ কথাটি তাদের মাথায় থাকে না। এ ক্ষেত্রে আমাদের কথা হলো সোনা চোরাচালানের শীর্ষের শক্তিকে আগে প্রতিহত করা হোক।

স্বাআলো/এস

.