
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় পেঁয়াজ তোলার কথা বলে ডেকে নিয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে স্বামী ফন্টু রহমান। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে আলমডাঙ্গার রায়লক্ষীপুর গ্রামের গাবতলার মাঠে এ ঘটনা ঘটে ।
জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যায় পেঁয়াজ তোলার কথা বলে কৌশলে একই এলাকার রায়লক্ষীপুর গাবতলার গ্রামের মাঠে নিয়ে যান স্বামী ফন্টু রহমান। এরপরই পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশীয় অস্ত্র হাসুয়া দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেন স্ত্রী ডালিমা খাতুনকে (৪২)। হত্যার পর লাশ গুম করতে পাশেই নবনির্মিত সোলার প্লান পাইপের ভিতর ফেলে দেন। পরদিন ভোরে মাঠে থাকা রক্ত ও আলামত নষ্টের চেষ্টা করেন। কেউ যেনো দেখতে না পায় এ জন্য ঘাস ও খড়কুটো দিয়ে পাইপের মুখ বন্ধ করে দেন।
বুধবার সন্ধ্যার দিকে দিনমুজুর স্ত্রীকে নিয়ে বের হন রাতে তিনি বাড়ি ফিরলেও স্ত্রী বাড়িতে ফেরেন না।
ছেলে জামিরুল মায়ের খবর জানতে চাইলে সঠিক উত্তর না দিয়ে রাত কাটান ফন্টু। বৃহস্পতিবার খুব ভাঙলে কোদাল নিয়ে মাঠে যান তিনি। নিজের জমিজমা না থাকলেও ভোরে কোদাল নিয়ে মাঠে যান তিনি। সকালে মাঠ থেকে ফিরতে দেখে অনেকে প্রশ্ন করেন। মাঠ থেকে ফেরার পর তার মায়ের খোঁজ নেন পিতার কাছে ছেলে জামিরুল। পিতার অসংলগ্ন উত্তরে তার সন্দেহ হয়। দুপুরে ফন্টু গা ঢাকা দেয়। এরপর ছেলে জামিরুল গ্রামবাসীকে নিয়ে তার মায়ের খোঁজ করতে বিকালে রায়লক্ষীপুর গ্রামের মাঠে একটি ভূট্টাক্ষেতে রক্ত ও চুল দেখতে পায় ।
গ্রামবাসী জানায়, ওই মাঠে সোলার প্যানেলের পরিত্যাক্ত পাইপের ভিতর একটি লাশের অংশ দেখতে পায় তারা। এ সময় লাশ শনাক্ত না হওয়ায় গ্রামবাসী আলমডাঙ্গা থানা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। লাশ উদ্ধারের জন্য ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের খবর দেয়া হয়।
গতরাত পৌণে ৯টার দিকে পাইপের মধ্য থেকে মরদেহ উদ্ধার করে আলমডাঙ্গায় নেয়া হয় । এদিকে গতকাল বিকালে ফন্টু রহমান তার স্থীর গহনা বিক্রি করতে আসেন সরোজগঞ্জ বাজারে। বিষয়টি জানাজানি হলে সরোজগঞ্জ ক্যাম্প পুলিশ তাকে আটক করেন ।
এদিকে আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল বলেন, বৃহস্পতিবার বিকালে সরোজগঞ্জ বাজার থেকে অভিযুক্ত ফন্টুকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্ত্রীর হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
তিনি আরো জানান, পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় তাকে হত্যার পর সোলার প্যানেলের পাইপের মধ্যে ফেলে দেয়া হয়। মরদেহ আজ শুক্রবার (১৭ মার্চ) চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।
স্বাআলো/এস
.

মফিজুর রহমান জোয়ার্দ্দার, চুয়াডাঙ্গা
