
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় গুটি কয়েক প্রভাবশালী ঘের ব্যবসায়ীর মৎস্য ঘেরে লবন পানি প্রবেশ করার কারণে ১১৫ একর (সাড়ে ৩শ’ বিঘা) জমির উচ্চ ফলনশীল হিরা-২ জাতের ধান ক্ষেত পুড়ে গেছে কৃষকদের। ফলে চরম ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন শত শত কৃষক ও তাদের আশায় থাকা পরিবার। ক্ষেতের ধান নষ্ট হওয়ায় উপজেলার পঞ্চকরণ ইউনিয়নের দেবরাজ গ্রমের ৫৫ জন কৃষক ও জমির মালিক এ ঘটনার বিচার চেয়ে সোমবার (২৭ মার্চ) দুপুরের দিকে পুড়ে যাওয়া ধান ক্ষেতের পাশে মানববন্ধন করেছেন। লবন পানির প্রভাবে পুড়ে যাওয়া সাড়ে ৩ শত বিঘা জমিতে এ বছর ২০ টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো। কিন্তু দরিদ্র কৃষকদের সে স্বপ্ন ভেস্তে গেছে। ঘের মালিকরা আর মাত্র ২০ দিন পরে ঘেরে পানি তুললে এমন ক্ষতি হতো না দরিদ্র কৃষক ও জমির মালিকদের।
মানববন্ধন চলাকালে কৃষক সাইফুল তালুকদার, শুনিল ঋষি, মাদব ডাকুয়া, আলামিন তালুকদার, আজিজ তালুকদার, ও আলী আকবর তালুকদার বলেন, আমন ধান তোলার পরে প্রতিবিঘা জমিতে ২০ হাজার টাকা খরচ করে হিরা-২ জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। যার ফলন হয়ে থাকে প্রতি বিঘায় ৪০/৪৫ মণ। আর মাত্র ১৫-২০ দিন পরেই ধান ঘরে তোলা যেতো। কিন্তু লবন পানিতে পুড়ে সে স্বপ্ন ছাই হয়েছে। বর্তমানে মোড়েলগঞ্জে আমাদের কোনো অভিভাবক নাই। ফলে কতিপয় প্রভাবশালীরা যা খুশি তাই করছে।
এ বিষযে মোড়েলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকাশ বৈরাগী বলেন, হটাৎ লবন পানি প্রবেশ করায় হতদরিদ্র কৃষকদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। তারা দেনা হয়ে গেছেন। কিছু প্রভাবশালী ঘের মালিকরা তাদের ব্যক্তি স্বার্থে ঘেরে লবন পানি তুলে অপূরণীয় ক্ষতি করেছে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান ওই কৃষি কর্মকর্তা।
দেবরাজ গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক লোকমান তালুকদার স্থানীয় ঘের ব্যবসায়ী ফরিদ শেখ, সাহেব আলী শেখ, নজরুল ও রাসেল শেখের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলেও জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম তারেক সুলতান সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরেই তদন্ত করে দ্রুত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন তহশীলদারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্বাআলো/এসএ
.

আজাদুল হক, বাগেরহাট
