
ঢাকার দরিদ্রদের মধ্যে ৫১ শতাংশ নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন করোনার ধাক্কায়। চাকরি ও ব্যবসা হারিয়ে এই পরিণতি বরণ করেন তারা। করোনার আগে তারা দারিদ্র্যসীমার ওপরে থাকলেও মহামারির সময়ে নিচে নেমে আসেন। সেই সঙ্গে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ৩০ লাখ মানুষকে নতুন করে দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিয়েছে। নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) দুইদিনব্যাপী বার্ষিক গবেষণা সম্মেলনের (বিআইডিএস রিসার্চ অ্যালামনাক-২০২৩) প্রথম দিনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। বুধবার রাজধানীর লেকশোর হোটেলে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংস্থাটির মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।
বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা সচিব সত্যজিত কর্মকার। প্রথম দিনে প্রায় ১০টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়।
ড. বিনায়ক সেন বলেন, ঢাকার মোট দরিদ্রের প্রায় ৫০ শতাংশ নতুন দরিদ্র। যারা নিম্নমধ্যবিত্ত থেকে নেমে গেছেন। এই শ্রেণির ওপর আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।
তিনি আরো বলেন, করোনা-পরবর্তী সময়ে দারিদ্র্য কমাতে আত্মকর্মসংস্থান বড় ভূমিকা রেখেছে। যাদের আর্থিক সঞ্চয় ছিলো, তারা সেটি ভেঙে নিজের কর্মসংস্থানের জন্য কাজে লাগিয়েছেন। তাছাড়া আধুনিক প্রযুক্তি, বিশেষ করে মোবাইলে আর্থিক সেবা বা এমএফএস দারিদ্র্য কমিয়ে আনতে সহায়তা করেছে।
ঢাকার দুই হাজার ৪৬টি খানার ওপর জরিপ করে বিআইডিএস এই গবেষণা করেছে। এতে উল্লেখ করা হয়, করোনার আগে অর্থাৎ ২০১৯ সালে দরিদ্র খানা বা পরিবারের আয়ের ৩৩ দশমিক ৬০ শতাংশ এসেছে আত্মকর্মসংস্থান থেকে। গত বছর সেটি বেড়ে ৩৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ হয়েছে।
বিনায়ক সেন আরো বলেন, করোনাকালে ঢাকার অনেক শিশু স্কুল থেকে ঝরে পড়েছে। নিম্ন-আয়ের পরিবারের মধ্যে সেই প্রবণতা বেশি। শহরাঞ্চলে সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা অল্প বিধায় এই জায়গায় বেশি নজর দিতে হবে।
ড. বিনায়ক সেন বলেন, করোনার সময়ে দরিদ্র বাড়লেও সেটা ছিলো সাময়িক। পরবর্তী সময়ে এটা কমতে শুরু করে। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দারিদ্র্য বেড়েছিলো। জুনের পর সেটি কমতে শুরু করে। পরে স্বাভাবিকের জায়গায় চলে যায়। তবে গ্রাম ও শহরের মধ্যে বৈষম্য এখনো আছে। এটা কমাতে হলে বিকেন্দ্রীকরণের বিকল্প নেই।
স্বাআলো/এস
.
ঢাকা অফিস
