
‘ওলামা লীগ’ নামে একটি সংগঠনের অস্তিত্ব পাওয়া যায় নব্বই দশকে। এরপর থেকে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের সক্রিয়তা বাড়তে দেখা যায়। এরমধ্যেই অনেক ভাগে বিভক্ত হয়ে নানা ধরনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডেও জড়িয়েছে নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে ওলামা লীগ নামে কোনো সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক নেই দাবি করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয় আওয়ামী লীগ। এবার সেই ওলামা লীগকেই সমমনা সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে দলটি।
শনিবার (২০ মে) ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে নতুন ওলামা লীগের প্রথম ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে সমমনা সংগঠন হিসেবে ওলামা লীগকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বীকৃতি দেবেন বলে জানা গেছে।
আরো জানা গেছে, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের স্বীকৃতি পেতে ওলামা লীগের নেতারা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে নানা সময়ে তদবির করে আসছেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে দেখা যায় তাদের। সবশেষ বৃহস্পতিবার (১৮ মে) জাতীয় সংসদ ভবনে গোলাপের কার্যালয়ে গিয়ে বৈঠক করেন ওলামা লীগের পদপ্রত্যাশী নেতারা।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে ওলামা লীগের নেতাদের সব ধরনের বিতর্কের ঊর্ধ্বে থেকে আগামী দিনে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে কাজ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগের আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়, এমন কোনো কর্মকাণ্ডে না জড়ানোর ব্যাপারেও কড়া ভাষায় সতর্ক করা হয়। এ ছাড়া বিভক্তি দূর করে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতেও বলেছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুস সোবহান গোলাপ বলেন, বিভিন্ন সময়ে ওলামা লীগের পদপ্রত্যাশী নেতারা দেখা-সাক্ষাৎ করেছেন। এবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার অনুমোদন নিয়েই সম্মেলন করছে সংগঠনটি। এতে একটা কমিটি করে দেয়ার পাশাপাশি সমমনা সংগঠন হিসেবে কাজ করবে ওলামা লীগ।
ওলামা লীগের অতীতে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করে প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক বলেন, বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি করা হবে। আমাদের সমমনা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বাসীরাই এবার ওলামা লীগে থাকবেন।
এর আগে ওলামা লীগের নেতাকর্মীদের কয়েকটি ভাগে ভাগে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন সময় নানা কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে। এরমধ্যে আওয়ামী লীগের আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিছু কর্মসূচিতেও একাধিক গ্রুপের নেতাকর্মীদের অংশ নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
আগামী নির্বাচন সামনে রেখে ওলামা লীগকে নতুন করে সাজাতে একাধিক গ্রুপের পদপ্রত্যাশী নেতারা আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। তাদের আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে যাতায়াতসহ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ বিভিন্ন সড়কে পোস্টার, ব্যানার লাগাতে দেখা গেছে।
ওলামা লীগের নেতারা বলছেন, ১৯৯৫ সাল থেকে তারা আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে আসছেন। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময়ে নির্যাতিতও হয়েছেন। তবে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, যা এখন আবার স্বাভাবিক হয়েছে।
ওলামা লীগের কয়েকজন পদপ্রত্যাশী নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের পক্ষে কাজ করতে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে এগিয়ে যেতে চান তারা। ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের স্বীকৃতি না পেলেও সমমনা হিসেবে স্বীকৃতি এলেও তারা খুশি। তাতে অন্তত আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক নেই, সেটি আর কেউ বলতে পারবে না।
এ বিষয়ে ওলামা লীগের এবারের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী মাওলানা কাজী আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের আলেম-ওলামাদের ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ করছি। ভবিষ্যতে নতুন নেতৃত্ব এই কাজকে আরো বেগবান করবেন বলেই আমার বিশ্বাস।
স্বাআলো/এসএ
.
ঢাকা অফিস
