
বাগেরহাটের রামপাল উপজেলা গৌরম্ভা এলাকায় আত্মহত্যার কারণ নিখে রেখে রাজ কুমার বিশ্বাস (৬০) নামের এক বৃদ্ধ গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে জানা গেছে।
শুক্রবার রাতে সে নিজের বাড়ির কাঁঠাল গাছে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করে। এ ঘটনায় ওই বৃদ্ধের জামাতা উত্তম কুমার সরকার বাদী হয়ে রামপাল থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে একটি মামলা করেছেন। পুলিশ এ মামলার প্রধান আসামি একই এলাকার তুহিন রায়কে (৫০) খুলনা থেকে গ্রেফতার করেছে।
আর চাঞ্চল্যকর এ মামলার আসামিরা হলেন, উপজেলার উত্তর গৌরম্ভা গ্রামের মৃত হারান চন্দ্র রায়ের ছেলে তুহিন রায় (৫০) ও একই গ্রামের অজিত অধিকারীর ছেলে মিলন অধিকারী (৪৫)।
এ ঘটনার বিষয়ে মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে রামপাল থানার ওসি এস, এম আশরাফুল আলম শনিবার (২০ মে) দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, আত্মহত্যাকারী রাজকুমার আসামি তুহিন রায়ের নিকট থেকে বিভিন্ন সময়ে এক লাখ টাকায় মাসে ৬ হাজার টাকা সুদে ৭ লাখ টাকা নেয়। এরপর রাজকুমার ৩ লাখ ৬৩ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। অপর আসামি মিলন অধিকারীর নিকট থেকে একই চুক্তিতে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেন। এরপর তিনি ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা সুদ বাবদ পরিশোধ করেন। সুদের অর্থ পাওয়ার পরপরই মূল টাকা পরিশোধের জন্য ১ নং ও ২ নং আসামি বৃদ্ধ রাজকুমারকে মানসিকভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। এক পর্যয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ শালিস করে মূল টাকা হইতে পরিশোধকৃত টাকা বাদ দিয়ে বাকী টাকা পরিশোধ করার জন্য বলেন। তারা উক্ত সিদ্ধান্ত না মেনে পুরো সুদসহ টাকা পরিশোধের জন্য জোর চাপ প্রয়োগ করে। তারা প্রকাশ্যে ও মোবাইল ফোনে চাপ দিতে থাকে। এতে রাজকুমার ভীত হয়ে মানমিসকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার দিকে গৌরম্ভা বাজারে মাছের বাজারের সামনে টাকার জন্য আবারো আসামিরা চাপ দেয় ও গালাগাল করে। এক পর্যায়ে রাজকুমার উপান্তর না পেয়ে একটি সুইসাইড নোট রেখে শুক্রবার রাতে বাড়ির কাঁঠাল গাছের সাথে রশি দিয়ে রাজকুমার আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনায় মামলা হওয়ার সাথে রামপাল থানার ওসি (তদন্ত) রাধেশ্যাম ও গৌরম্ভা ফাড়ির এসআই নাসির উদ্দিন শনিবার ভোরেই অভিযান চালিয়ে খুলনার লবনচরা থানার জিন্নাহ পাড়া এলাকার একটি বাড়ি থেকে প্রধান আসামি তুহিন রায়কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। বাকী আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
স্বাআলো/এসএস
.

আজাদুল হক, বাগেরহাট
