
যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নবায়ন, স্বীকৃতি, কমিটি অনুমোদন ও পরিদর্শনের নামে ‘অর্থ বাণিজ্যে’ নেমেছে একটি প্রতারক চক্র। চক্রটি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের ফোন করে টাকা দিতে বলছে। বোর্ড কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অবগত হওয়ার পর সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে।
রবিবার (২১ মে) সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
সূত্রমতে, খুলনা বিভাগের ১০ জেলা নিয়ে যশোর শিক্ষা বোর্ডের কার্যক্রম। এ বোর্ডের অধীনে প্রায় ৪ হাজার মাধ্যমিক স্কুল ও দুই হাজার উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে। পরীক্ষা গ্রহণ ছাড়াও এসব প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন, স্বীকৃতি নবায়ন, ব্যবস্থাপনা কমিটি অনুমোদন, অডিটসহ বিভিন্ন কার্মকাণ্ড পরিচালনা করে শিক্ষা বোর্ডটি। সম্প্রতি একটি চক্র প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি নবায়ন, কমিটি অনুমোদন, পরিদর্শন, অডিটসহ বিভিন্ন কাজের বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শকের নাম ভাঙিয়ে মোবাইল ফোন করে অর্থ দাবি করছে।
রবিবার দুপুর ১ টার সময় যশোরের মণিরামপুর উপজেলার কুলটিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কমলেশ সরকার ওই প্রতারক চক্র ফোন দেয়। ওই প্রধান শিক্ষক জানান, তার কাছে ০১৯২৭৮৭৫০১০ নম্বর থেকে বিদ্যালয় পরিদর্শক পরিচয়ে ফোন করা হয়। ‘অডিট আপত্তি আছে, ঝামেলায় পড়বেন’ এই বলে দুই হাজার ৫০০ টাকা বিকাশ করতে বলেন। এ বিষয়টি তাৎক্ষণিক তিনি বিদ্যালয় পরিদর্শককে জানিয়েছেন।
একই অভিযোগ করেছেন ঝিনাইদহ সদরের পাগলাকানাই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (আইসিটি) খন্দকার আব্দুল হামিদ।
তিনি বলেন, ০১৯২৭৮৭৫০১০ নম্বর থেকে ফোন করে বিদ্যালয় পরিদর্শন করতে আসার নাম করে বিকাশে টাকা চাওয়া হয়। এভাবে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ১০ থেকে ২০ জন শিক্ষক বোর্ডে ফোন করে জানায়। তখন তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিয়ে বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। যা বোর্ডের ওয়েবসাইটে রবিবার (২১ মে) প্রকাশ করা হয়েছে।
জানতে চাইলে শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন বিদ্যালয়ে প্রতারক চক্র ফোন করে টাকা চাইছে। আমরা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সতর্ক করে বোর্ডের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হবে।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষা বোর্ডের সকল কার্যক্রমের ফিস সোনালী ব্যাংকের পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে অনলাইনে নেয়া হয়। তাই প্রতারক চক্রের সাথে কোনভাবে নগদ, বিকাশ, রকেটসহ কোন মাধ্যমেই লেনদেন না করতে বলা হয়েছে। এধরনের প্রতারকদের বিষয়ে স্থানীয় থানায় জিডি ও শিক্ষা বোর্ডকে অবহিত করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে যশোর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আহসান হাবিব বলেন, যশোর শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শকের নাম ব্যবহার করে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে টাকা দাবি করে বিকাশে পাঠিয়ে দিতে বলছেন। সব শিক্ষক-কর্মচারীদের শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইডে প্রতারক হতে সাবধান হওয়ার সর্তককরণমূলক বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। সেই যে ফোন নম্বর টাকা চাওয়া হচ্ছে সেটা উল্লেখ করে স্থানীয় থানায় শিক্ষকদের ডিজি করার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
স্বাআলো/এসএ
.
রুহুল আমিন, যশোর:
