
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সেপ্টেম্বরের মধ্যেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করা হবে।
রবিবার (২১ মে) বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক কার্যালয়ের উদ্যোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিষয়ক সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। সংলাপটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আনিসুল হক বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রোধ করার জন্য বা গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়নি। সাইবার অপরাধের বিষয়ে আইনটি করা হয়েছে। আইনের অপব্যবহার যাতে না হয় সে জন্য তিনি কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর কিছু স্থায়ী সমাধান দরকার। তাই আইনটিতে কিছু সংশোধনী আনা হবে।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমান বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কতগুলো ধারার শাস্তি দণ্ডবিধির চেয়ে কঠোর; যেমন ২৮, ২৯ ও ৩১ ধারা। এমনকি কোনো কোনো অপরাধ ফের করার জন্য যাবজ্জীবনের মতো সাজা হতে পারে। এসব বিভিন্ন ধারার কথা উল্লেখ করে আহসান আদেলুর রহমান বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলো এগুলো মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য বড় বাধা এবং গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির জন্য চ্যালেঞ্জ।
আইনটির অপব্যবহার হচ্ছে এবং অপব্যবহারের সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করেন সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল। তিনি বলেন, সাইবার অপরাধের জন্য আইনটির পক্ষে তিনি। কিন্তু অবশ্যই এটি সংশোধন করতে হবে।
সংশোধনের ক্ষেত্রে কয়েকটি সুপারিশও তুলে ধরেন বুলবুল। তিনি বলেন, প্রথমত, আইনের অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে। এ জন্য বিস্তারিতভাবে আইনটি পর্যালোচনা করতে হবে। দ্বিতীয়ত, জামিনযোগ্য ধারা বাড়াতে হবে এবং শাস্তি কমাতে হবে। অপরাধের সংজ্ঞাগুলো আরও সুনির্দিষ্ট করতে হবে। কারণ, আইনটিতে অপব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শকের হাতে অঢেল ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করতে হলে আগে অভিযোগটি প্রেস কাউন্সিলে পাঠাতে হবে। এ ক্ষেত্রে তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, প্রেস কাউন্সিলও উচ্চ আদালতের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে পরিচালিত হয়।
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক কাবেরী গায়েন। তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কারণে অধিকাংশ সংবাদপত্র ও গণমাধ্যম এখন ‘সেলফ সেন্সরশিপ’ (নিজ থেকে চেপে যাওয়া) করে। কিন্তু সেলফ সেন্সরশিপ করে কোনো দেশ সমৃদ্ধ হতে পারে না।
স্বাআলো/এসএ
.
ঢাকা অফিস
