সিজারের এ চিত্র উদ্বেগজনক

সরকারি হাসপাতালগুলোতে সিজারের হার কমলেও ভয়ঙ্করভাবে বাড়ছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে। যেখানে প্রাতিষ্ঠানিক সেবা নেয়ার পরও সরকারি হাসপাতালের তুলনায় সিজারের হার দ্বিগুণ। তৃতীয় বাংলাদেশ আরবান হেলথ সার্ভের (বিইউএইচএস) ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য তুলে ধরে রিপোর্টে।

বিভিন্ন হাসপাতাল কিংবা স্বাস্থ্য সেবার আওতায় হওয়া প্রাতিষ্ঠানিক মোট শিশুর বেশির ভাগের জন্ম হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে। স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া বস্তির বাইরে থাকা জনগোষ্ঠীর ৭৭ শতাংশ শিশুর জন্মই হয় অস্ত্রোপচারে। এছাড়া শহরে বসবাসরত ৭৫ শতাংশ ও স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া বস্তির জনগোষ্ঠীর মোট জন্মদানের ৫৮ দশমিক ৩ শতাংশ হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে। এছাড়াও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) পাওয়া গর্ভধারণ সুবিধার তুলনায় বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবায় সবচেয়ে বেশি শিশুর জন্ম হয়েছে অস্ত্রোপচারে।

কিছুদিন আগে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে নরমাল ডেলিভারির পরও এক প্রসূতিকে জোর করে সিজার করার অভিযোগ উঠেছে। ওই প্রসূতির প্রসব বেদনা শুরু হলে এক প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ডাক্তররা বলেন, রাণীকে দ্রুত সিজার করতে হবে। নতুবা প্রসূতি ও সন্তান দুইজনকেই বাঁচানো যাবে না। ডাক্তারদের কথায় সিজারের জন্য ১২ হাজার টাকা চুক্তি হয়। প্রসূতিকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গেলে নরমালে তার একটি পুত্র সন্তান হয়। কিন্তু হাসপাতালের ডাক্তার ও ম্যানেজার মিলে তাকে মারধর ও নানা রকম ভয় ভীতি দেখিয়ে অজ্ঞান করে সিজার করে। প্রশাসনের নাকের ডগায় কিভাবে চলে ক্লিনিক নামের মানুষ মারার ফাঁদ?

জেলায় সিভিল সার্জন আছেন একজন। তার দায়িত্বটা কি শুধু মাস গেলে পকেট পুরে সরকারি টাকা নিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তোলা? এ সব প্রশ্ন আজ মানুষের সামনে এসে হাজির হচ্ছে। এতো কিছু অব্যবস্থার মধ্যেও প্রাইভেট হাসপাতালে রোগীর কোনো কমতি নেই। তার কারণ এসব ক্লিনিকে নাকি সরকারি হাসপাতালের বড় বড় ডাক্তাররা রোগী পাঠান। আর তাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে আসে দালালরা। হায়রে শিক্ষিত ডাক্তার নামের মানবতার সেবক! টাকার এতো প্রয়োজন যে সরকারি উচ্চ বেতনের টাকায় পেট ভরছে না, তাই মলের ওপর রাখা টাকা জিহ্বা দিয়ে তুলতেও ঘৃণা করছে না।

এসব ক্লিনিকে যেসব সরকারি ডাক্তারের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে আগে শাস্তির ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকারি বেতনের টাকায় যদি তাদের পেট না ভরে তাহলে তাদের চাকরি থেকে বিদায় দিতে হবে ফ্রিস্টাইলে টাকা আয় করার জন্য। মানবতার সেবার নামে এসব ডাক্তার নামের ডাকাতরা মানবতা বিরোধী অপরাধ করে যাচ্ছেন বিনা বাধায়। এভাবে ফ্রিস্টাইলে চলার জন্য এক সাগর রক্তের বিনিময়ে দেশটা স্বাধীন হয়নি।

স্বাআলো/এস

.