
যশোরের কেশবপুরে মাছের ঘেরের পানি থেকে জিহাদ হোসেন (৬) নামে এক মাদরাসাছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ মে) দুপুরে উপজেলার আলতাপোল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
শিশু জিহাদ হোসেন আলতাপোল গ্রমের একটি বাড়িতে গড়ে ওঠা ফাতেমাতুজ্জোহরা (রা) মহিলা কওমী মাদরাসার শিক্ষার্থী ছিলো। সে একই গ্রামের আলমগীর হোসেনের ছেলে।
অভিযোগ উঠেছে, হুজুর মাদরাসার বিছানা পরিষ্কার করার জন্য তাকে মাছের ঘেরে পাঠায়। ওই ঘেরের পানিতে বিছানা পরিষ্কার করতে গিয়ে শিশুটি পানিতে ডুবে যায়। সঙ্গে থাকা অন্য ছাত্ররা দ্রুত মাদরাসায় ফিরে ঘটনা হুজুরকে জানায়। কিন্তু হুজুর শিক্ষার্থীদের কথা বিশ্বাস না করে উল্টো তাদের মারপিট করেন। পরে পরিবারের লোকজন পানি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে।
সরেজমিন ওই মাদরাসাছাত্রের বাড়িতে গেলে এলাকাবাসী ও পরিবারের লোকজন জানায়, দুপুরে মাদরাসার হুজুর আয়ুব হোসাইন শিশু শিক্ষার্থী জিহাদ হোসেনসহ অন্যদের পাশের একটি ঘেরে বিছানা পরিষ্কার করতে পাঠান। ঘেরের পানিতে বিছানা পরিষ্কার করার সময় পা পিছলে সে পানিতে পড়ে যায়।
ওই মাদরাসার ছাত্র জিহাদের চাচাতো ভাই আরাফাত হোসেন (৭) জানায়, জিহাদের পানিতে পড়া যাওয়ার ঘটনা হুজুরকে এসে জানালে তার কথা বিশ্বাস না করে তাকে মারপিট করেন। ঘটনা দ্রুত এলাকায় জানাজানি হলে জিহাদের চাচা জাহিদ হাসান বিষয়টি শুনে ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে ঘেরের পানি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেন। ওই শিশুটির মরদেহ ঘিরে স্বজনদের আহাজারিতে এক হৃদয় বিদারক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার পর থেকে মাদরাসার হুজুর পালিয়ে গেছেন বলে এলাকার লোকজন জানিয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
নিহত জিহাদের বাবা আলমগীর হোসেন কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ওই হুজুরের অবহেলার কারণে তার ছেলেটি মারা গেছে। ঘটনা উল্লেখ তিনি থানায় অভিযোগ করবেন।
ফাতেমাতুজ্জোহরা (রা) মহিলা কওমী মাদরাসায় গিয়ে জানা যায়, বাড়ির ভেতর মাদরাসা বানিয়ে সেখানে ৩০ থেকে ৩৫ জন ছাত্র-ছাত্রীকে লেখাপড়া করানো হয়। এর মধ্যে ১২ জন ছাত্রী রাতে ওইখানে থাকে। রাতে ছাত্রদের বাড়িতে নিয়ে যান অভিভাবকরা। সকালে মাদরাসায় আসে। হুজুর বাড়িতে আছে কিনা জানতে চাইলে বাড়ির ভেতর থেকে তার মেয়ে পরিচয় দিয়ে হাফসা খাতুন জানায়, তার বাবা বাড়িতে নেই। কোথায় গেছে সেটি তারা জানে না। বাড়িতে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ানো হয় বলে সে জানায়।
এছাড়া মাদরাসার সাইনবোর্ডে থাকা ওই প্রতিষ্ঠানের মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মফিজুর রহমান বলেন, পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হবে।
স্বাআলো/এসএ
.

আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ, কেশবপুর (যশোর)
