
জুয়া প্রতিরোধে নতুন আইন করছে সরকার। এজন্য নতুন ‘জুয়া আইন, ২০২৩’ এর খসড়া করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। মূলত ১৮৬৭ সালের ‘দ্য পাবলিক গ্র্যাম্বলিং অ্যাক্ট’ যুগোপযোগী করে নতুন আইনটি করা হচ্ছে।
নতুন আইনে অনলাইন জুয়া অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। কারণ অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে; এ জুয়ার খপ্পরে নিঃস্ব হচ্ছেন অনেকে। অনলাইন জুয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও খুনের ঘটনাও ঘটছে। পাতানো খেলা বা ম্যাচ ফিক্সিংয়ের কথাও জোরেশোরে শোনা যায়, তাই এ বিষয়টিও রয়েছে খসড়া আইনে।
খসড়া আইনে জুয়ার শাস্তি সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড। আগের আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল ৫০০ টাকা জরিমানা ও তিন মাসের জেল।
তবে সরকার চাইলে পর্যটন বা বিশেষায়িত এলাকা, কোনো হোটেল বা ক্লাবকে এ আইনের আওতামুক্ত রাখতে পারবে বলেও খসড়ায় জানানো হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৮৬৭ সালের জুয়া আইন হালনাগাদ করতে জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব লিপিকা ভদ্রকে আহবায়ক করে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিলো। কমিটি গত ফেব্রুয়ারি মাসে আইনের খসড়াটি জমা দেয়।
জননিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন খসড়া আইনের বিষয়ে মন্ত্রণালয়গুলোর মতামত নেয়া হচ্ছে। শিগগির আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় খসড়াটি চূড়ান্ত করে তা মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হবে।
জননিরাপত্তা বিভাগের আইন ও শৃঙ্খলা অনুবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান জুয়া আইনটি দেড়শ বছরেরও বেশি পুরোনো। এ আইন দিয়ে হাল আমলের জুয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। কারণ এখন জুয়ায় তথ্যপ্রযুক্তির বিষয়টি যুক্ত হয়েছে, যা আইনের আওতাভুক্ত নয়। একইসঙ্গে শাস্তিও খুবই কম। তাই জুয়ার আধুনিক পর্যায়গুলো বিবেচনায় নিয়ে নতুন আইন করা হচ্ছে। একইসঙ্গে শাস্তিও কয়েকগুণ বাড়ানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এসএম রেজাউল মোস্তফা কামাল বলেন, আমরা নতুন জুয়া আইনের একটি খসড়া করে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার বা মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠিয়েছি। অনেক মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে মতামত পেয়েছি। আরো কিছু মতামত পেলে আন্তঃমন্ত্রণালয় মিটিং করে খসড়াটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়ে দেবো। আমরা আশা করছি, শিগগির আন্তঃমন্ত্রণালয় মিটিং করতে পারবো।
তিনি বলেন, আমরা নতুন আইনে অনলাইন জুয়া, খেলা নিয়ে জুয়া- সব বিষয়ই রাখছি। যেহেতু পুরোনো আইনটি যুগোপযোগী করা হচ্ছে, তাই ২০২৩ সালের আলোকে যা যা রয়েছে সবই আমরা অন্তর্ভুক্ত করবো।
আওতামুক্ত ঘোষণা
সরকার ইচ্ছা করলে কোনো পর্যটন এলাকা বা বিশেষায়িত এলাকা, হোটেল বা ক্লাবকে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দিয়ে এই আইনের আওতামুক্ত ঘোষণা করতে পারবে বলে খসড়া জুয়া আইনে উল্লেখ করা হয়েছে।
স্বাআলো/এস
.
ঢাকা অফিস
