গ্যাস ও বুক জ্বালাপোড়া থেকে বাঁচার ঘরোয়া উপায়

একটুখানি ভাজাভুজি কিংবা মশলাজাতীয় খাবার খেলেই বুক জ্বালাপোড়া শুরু। সেইসঙ্গে টক ঢেকুরও হয় সঙ্গী। এমন সমস্যায় মুঠো মুঠো গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেতে হয় বাধ্য হয়ে। কিন্তু এভাবে ওষুধ খেয়ে যাওয়াও শরীরের জন্য খারাপ। এমন অবস্থায় কী করবেন? বুক জ্বালা মূলত হজমের সমস্যা থেকেই হয়। কিছু অভ্যাস বদলাতে পারলে ও খাদ্যাভ্যাসে সামান্য পরিবর্তন আনলেই এমন সমস্যা থেকে অনেকটাই রেহাই মিলবে-

আমাদের ঘরেই এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিডের কাজ করে। এগুলো সম্পর্কে চলুন জেনে নিই-

দারুচিনি: রান্নাঘরে থাকা এই মসলাটি গ্যাসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। এক কাপ পানিতে আধা চা চামচ দারুচিনি গুঁড়া মিশিয়ে নিন। কয়েক মিনিট এই মিশ্রণ ফুটিয়ে নিন। দিনে দুই থেকে তিনবার এই পানীয় পান করুন। দারুচিনি প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড হিসেবে কাজ করে।

আদা: দারুচিনির মতো এই মসলাটিও পেটে গ্যাস জমতে দেয় না। গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা থেকেও মুক্তি দেয় আদা। খাবার খাওয়ার পর এক টুকরো আদা মুখে নিয়ে চিবিয়ে রস খান। উপকার পাবেন। অনেকে সরাসরি আদা খেতে পারেন না। তারা রান্নায় বেশি আদা ব্যবহার করতে পারেন।

পুদিনাপাতা: পুদিনাপাতায় রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস। গ্যাস ও বদহজম এড়াতে পুদিনাপাতার রস বা পাতা চিবিয়ে খান। খাওয়ার পর এক কাপ পুদিনাপাতার চা খাওয়ার অভ্যাস করতে পারলে পেটের সমস্যা থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া সম্ভব। খুব সহজেই এই চা বানানো যায়। ৬-৭টি টাটকা পুদিনাপাতা গরম জলে ফুটিয়ে নিন। ব্যাস, পুদিনা-চা তৈরি।

তুলসি পাতা: কয়েকটি তুলসি পাতা ভাল করে ধুয়ে নিন। তারপর এটি চিবিয়ে খান। ৪-৫ টি তুলসি পাতা চিবিয়ে খেলেই হবে। এটি গ্যাসটিকের বুক জ্বালাপোড়া হ্রাস করতে সাহায্য করে। এছাড়া ২ কাপ পানিতে ৫/৬ টি তুলসি পাতা ফুটতে দিন। পানি ফুটে ১ কাপ পরিমাণ হয়ে এলে তা নামিয়ে গরম গরম পান করুন। এটি বুক জ্বালাপোড়া তাৎক্ষনিক কমিয়ে দেবে।

বেকিং সোডা: এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন। এটি পান করুন। তাৎক্ষনিক বুক জ্বালাপোড়া কমাতে এটি বেশ কার্যকর। বেকিং সোডার সোডিয়াম বাই-কার্বনেট অ্যাসিডিটির সমস্যা খুব দ্রুত নিরাময়ে বিশেষভাবে সহায়ক। এর পিএইচ ৭ মাত্রার বেশী হওয়ার কারণে এটি পেটের অ্যাসিডকে শান্ত করে জ্বালাপোড়া কমিয়ে দেয়।

অ্যালোভেরার জুস: বুক জ্বালাপোড়া রোধ করতে খাবার খাওয়ার আগে আধা কাপ অ্যালোভেরা জুস পান করুন। অ্যালোভেরার জুস বুক জ্বালাপোড়া রোধ করে ইনফ্লামেশন দূর করে। তবে অতিরিক্ত অ্যালোভেরা জুস পান করা থেকে বিরত থাকুন। বেশি পরিমাণ অ্যালোভেরা জুস পানে ডায়ারিয়া দেখা দিতে পারে।

ঠাণ্ডা দুধ: অ্যাসিডিটির সমস্যা তাৎক্ষণিকভাবে দূর করতে ঠাণ্ডা দুধের জুড়ি নেই। দুধের ক্যালসিয়াম পাকস্থলীতে পৌঁছে বাড়তি অ্যাসিড যা অ্যাসিডিটি তৈরি করে তা শোষণ করে নেয়। এবং বুক ও পেটের যন্ত্রণাদায়ক জ্বালা থেকে মুক্তি দেয়।

জিরা: এক কাপ পানিতে দুই চা চামচ জিরা দিয়ে ১০ মিনিট জ্বাল দিন। ঠান্ডা হয়ে গেলে এটি পান করুন। জিরা পেটে গ্যাস হওয়া রোধ করে পেটে অ্যাসিড হওয়া কমিয়ে দেয়।

স্বাআলো/এসএস