লিজ দেয়া একটি জমি নিয়ে প্রতারণা শুরু করেছেন শুভাশীষ সাহা নামে এক ব্যক্তি। এর আগে একই জমি বিক্রির করার কথা বলে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। এসব টাকা হজম করতে ‘অনৈতিক দাবি’ নিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে তিনি দেনদরবারও করেছেন।
তবে কোনো ফায়দা না হওয়ায় সর্বশেষ বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) প্রেসক্লাব যশোরে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন শুভাশীষ সাহা।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি গোপন করে উল্টো তার ‘অনৈতিক দাবি’ অনুযায়ী প্রশাসন কাজ না করায় তাদেরও দোষারোপ করেছেন।
শুভাশীষ সাহা সিরাজগঞ্জ সদরের ফজলুল হক রোডের শ্রীদাম সাহার ছেলে। তিনি বর্তমানে ঢাকার মগবাজারের নয়াটোলা এলাকায় বসবাস করেন।
সংবাদ সম্মেলনে শুভাশীষ সাহার দেয়া কাগজপত্র ও লিখিত বক্তব্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের হাটবিলা মৌজার ২৪ বিঘা জমি তিনি আনোয়ার হোসেন বিপুল ও রাজু আহম্মেদকে ২০ বছরের জন্য লিজ দেন। এজন্য তাদের মধ্যে একটি চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস থেকে তিনি ভাড়া পাবেন। এই জমিতে লিজগ্রহিতারা কৃষি খামার ও মাছ চাষের জন্য পুকুর খনন করবেন। চুক্তিতে মাছ চাষের কথা বলা থাকলেও সংবাদ সম্মেলনে শুভাশীষ সাহা পুকুর খনন করা নিয়ে আপত্তি তুলেছেন। এজন্য তিনি লিজগ্রহিতা আনোয়ার হোসেন বিপুল ও রাজু আহম্মেদকে অভিযুক্ত করেন।
যোগাযোগ করা হলে রাজু আহম্মেদ বলেছেন, ‘শুভাশীষ সাহা জমিটি আমাদের কাছে বিক্রি করার কথা বলে কয়েক দফায় প্রায় ৪০ লাখ টাকা নিয়েছেন। কিন্তু জমিটি তিনি আমাদের লিখে দিতে পারেননি। এজন্য পরে তিনি চুক্তিপত্রের মাধ্যমে ভাড়া দিয়েছেন। কিন্তু এখন তিনি দলিল না করে দিতে পারলেও মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করছেন। আমরা চুক্তি অনুযায়ী কাজ করছি।’
এব্যাপারে আনোয়ার হোসেন বিপুল বলেছেন, ‘আমরা জমিটি ২০ বছরের জন্য লিজ নিয়েছি। সেখানে মাছ চাষ করা হবে। কিন্তু চুক্তিতে অগ্রিম কোনো টাকা দেয়ার কথা না থাকলেও তাকে আমরা প্রায় ৪০ লাখ টাকা দিয়েছি। যার অধিকাংশই তার ব্যাংক হিসাবে জমা দেয়া হয়েছে। এখন শুভাশীষ সাহা আরো টাকা দাবি করছেন। না দেয়ায় তিনি প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছেন। কিন্তু তদন্তে তার অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।’
জানা যায়, শুভাশীষ সাহা বিদেশি এই কোম্পানির জমিটি এর আগে ব্যারিস্টার কামরুজ্জামান নামে এক ব্যক্তির কাছে বিক্রির কথা বলে ৭৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। পরে তিনি কামরুজ্জামানকে ওই জমি দলিল করে দেননি। তার টাকাও ফেরত দেননি। এজন্য তার নামে ঢাকার সিএমএম আদালতে কামরুজ্জামানের ভাই মনিরুজ্জামান মামলা করেছেন।
স্বাআলো/এস
.
