ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর হামলা, ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ আহত

স্বাধীন আলো লোগো

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পাহাড়ি এলাকা জঙ্গল সলিমপুরে উচ্ছেদ শেষে ফেরার পথে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর হামলার ঘটনায় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং অন্তত ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটেছে।

ঘটনার সময় হামলাকারীরা বেসরকারি টিভি চ্যানেল ৭১ টিভির গাড়ি ভাঙচুর করে।

আহত কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) উমর ফারুক হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। উমর ফারুক সীতাকুণ্ড খাসজমিতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্ব দেন।

চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে সীতাকুণ্ড উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত জঙ্গল সলিমপুরে প্রায় এক হাজার ২৫৬ একর জমি রয়েছে, যা পাঁচটি মৌজার অধীনে। এই পাঁচটি মৌজার মধ্যে জঙ্গল লতিফপুর, জঙ্গল সলিমপুর, জঙ্গল ভাটিয়ারি, জালালাবাদ ও উত্তর পাহাড়তলীতে তিন হাজার ৭০ একর সরকারি খাসজমি রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ পাহাড়ি ভূমি রয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বেশ কয়েকটি ভূমিদস্যু সিন্ডিকেট সেখানে পাহাড় কেটে সরকারি জমি দখল করে কলোনি স্থাপন করেছে এবং সেখানে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ও অন্যান্য ইউটিলিটি লাইন স্থাপন করেছে বলে অভিযোগ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ও পরিবেশ অধিদফতরের।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের (ডিসি) স্টাফ অফিসার প্লাবন কুমার বিশ্বাস জানান, উমর ফারুকের নেতৃত্বে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে। দুপুর ১২টা থেকে অভিযান শুরু হয় এবং কয়েক ঘণ্টাব্যাপী এই অভিযানে প্রায় ১০০টি স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয়। বিকাল ৩টার দিকে ফেরার সময় জঙ্গল সলিমপুরের গেটে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এডিএসপি-ডিএসবি) আবু তায়েব আরিফ বলেন, উচ্ছেদ স্থান থেকে ফেরার সময় ওই এলাকার ভূমি দখলের মূলহোতা স্থানীয় ইয়াসিন বাহিনীর সদস্যরা পাহাড়ের ওপর থেকে ইট ছুড়তে থাকে। উপর্যপুরি ইটের আঘাতে ম্যাজিস্ট্রেট ও ৩ জন পুলিশ সদস্য আহত হন।

তিনি বলেন, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি চালায় এবং এলাকা থেকে বের হতে সক্ষম হয়। জমি দখল, মাদক চোরাচালান ও আগ্নেয়াস্ত্র মামলায় দায়ের করা একাধিক মামলায় ইয়াসিন সম্প্রতি জেল থেকে বেরিয়ে এসেছেন।

‘ছিন্নমূল সমবায় সমিতি’র ব্যানারে ২০০৪ সালে জঙ্গল সলিমপুরে দখল শুরু হয়। প্রথমে নদী ভাঙনে বাস্তুচ্যুত মানুষ এবং অন্যান্য জেলা থেকে নিম্নআয়ের মানুষ এসে বন উজাড় করে স্থানীয়দের সহায়তায় ঘর তৈরি করতে থাকে।

পরবর্তীতে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা আবাসিক প্লট দেয়ার নামে এসব মানুষের কাছ থেকে দ্রুত টাকা আদায়ের জন্য জমি ব্যবসা শুরু করে।

গত বছর থেকে এসব জমি উদ্ধারে অভিযান চালানো হচ্ছে।

ইয়াসিন বাহিনীসহ বেশ কিছু অপরাধী চক্র সেখানে বসবাসকারী গরিব মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে অবৈধ স্থাপনাগুলোকে আশ্রয় দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ ব্যাপারে ইয়াছিনকে আসামি করে থানায় মামলা করা হবে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তারা।

স্বাআলো/এসএ

.

Author
চট্টগ্রাম ব্যুরো