খুলনা ও রাজশাহী জেলায় শিরায় প্রয়োগযোগ্য স্যালাইনের তীব্র সংকট চলছে। বাড়তি টাকা দিয়েও ফার্মেসিতে স্যালাইন মিলছে না। এমনকি সরকারি হাসপাতালগুলোতেও স্যালাইনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
খুলনায় আইভি (শিরায় দেওয়া) স্যালাইনের তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছে। বাড়তি টাকা দিয়েও ফার্মেসিতে স্যালাইন পাওয়া যাচ্ছে না। দুই-একটি দোকানে পাওয়া গেলেও রাখা হচ্ছে তিন গুণ দাম। এর মধ্যে গত বুধবার বাড়তি দাম রাখার বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। তবে এরপর থেকে স্যালাইন সংকট আরো তীব্র হয়েছে।
এদিকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও রয়েছে স্যালাইন সংকট। গত সপ্তাহের প্রায় পুরোটা জুড়ে হাসপাতাল থেকে ডেঙ্গু রোগীদের কোনো স্যালাইন দেয়া হয়নি। অবশ্য বৃহস্পতিবার হাসপাতালটিতে তিন হাজার লিটার স্যালাইন এসেছে। কিন্তু চিকিত্সাধীন থাকা বিপুলসংখ্যক রোগীর তুলনায় এটি খুবই সামান্য।
চিকিত্সকরা জানান, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে দিনে এক থেকে দুই লিটার, কোনো কোনো ক্ষেত্রে এরও বেশি স্যালাইন দেয়া প্রয়োজন হতে পারে। ডেঙ্গু রোগীর চিকিত্সায় সাধারণত দশমিক ৯ শতাংশ সোডিয়াম ক্লোরাইড স্যালাইন রোগীর শরীরে পুশ করতে হয়। চিকিত্সকেরা এটাকে ‘নরমাল স্যালাইন’ বলে থাকেন।
গত বুধবার নগরীর শান্তিধাম মোড়ের একটি ফার্মেসিতে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। সেখানে ৮৭ টাকা মূল্যের স্যালাইন ২০০ টাকায় বিক্রি করার অভিযোগে দোকানটিকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এরপর থেকে আশপাশের দোকানদাররা স্যালাইন বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে।
রাজশাহী জেলায় শিরায় প্রয়োগের স্যালাইন সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। ডেঙ্গু রোগী বেড়ে যাওয়ায় এই স্যালাইনের চাহিদাও বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে চাহিদার তুলনায় স্যালাইনের সরবরাহ বাড়েনি বরং আগের চেয়ে আরো কমেছে।
রাজশাহীর সবচেয়ে বড় ওষুধের মার্কেট লক্ষ্মীপুর ও সাহেব বাজারের ফার্মেসিগুলোতে শিরায় প্রয়োগের স্যালাইন পাওয়া যাচ্ছে না। এতে রোগী ও স্বজনরা বিপাকে পড়েছেন। কিছু দোকানে যত্সামান্য স্যালাইন মিললেও দ্বিগুণ বা তারও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
জানা যায়, ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় রাজশাহীতে শিরায় প্রয়োগের স্যালাইনের চাহিদা স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক গুণ বেড়েছে। তবে চাহিদার তুলনায় স্যালাইন প্রস্তুতকারী কোম্পানি থেকে বাজারে সরবরাহ বাড়েনি, বরং কমেছে।
সূত্র জানায়, মূল্য তালিকার দ্বিগুণের বেশি দামে (৯১ টাকা মূল্যের স্যালাইন ২০০ টাকা) বিক্রির দায়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার ‘আরোগ্য নিকেতন ফার্মেসি’র মালিককে ৩০ হাজার টাকা এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির দায়ে একই এলাকার ‘আলিফ লাম মিম ফার্মেসি’র মালিককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাসুম আলী।
স্বাআলো/এস
.
